‘খুনি হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ভারতের হাইকমিশনারকে বের করে দেওয়া উচিত ছিল’

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে দেবিদ্বার উপজেলার ফুলতলী এলাকায় উঠান বৈঠকে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত বলেন, আপনি আমার দেশের সন্ত্রাসীকে পেলে-পুষে বড় করবেন, তাদের ট্রেনিং দেবেন, অর্থ দেবেন। আওয়ামী লীগের অন্তত ত্রিশ হাজার কর্মীকে ভিসা-পাসপোর্ট ছাড়া ভারত আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। তো আপনি আমার দেশের সন্ত্রাসী পালবেন, বাংলাদেশকে বিরক্তি করে রাখবেন। আর আমি আপনার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখব, এত ঠ্যাকা পড়ে নাই।

ভারত তাদের সন্ত্রাসীগুলো কয়দিন পরপর বাংলাদেশে ছেড়ে দেয় অভিযোগ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের সন্ত্রাসীগুলো ভারত আবার পাহারা দেয়, ট্রেনিং দেয়, অর্থ দেয়। অনেকদিন পরপর আমাদের দেশে ছাড়ে। আমাদের দেশে এসে দুষ্কর্ম করে। এ বিষয়ে তাদের বারবার করে বলা হয়েছে, শোনে না। তো যেহেতু শোনে না, এখন আমাদের সন্ত্রাস যদি থেকে থাকে, যদি আমরা বলি যে আপনাদের দেশের সন্ত্রাসগুলো আমরা বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে টাকা পয়সা দিয়ে ট্রেনিং দেব, আপনার যদি সেটা বন্ধ না করেন, এটা কি আমাদের অপরাধ?

তিনি আরও বলেন, সম্পর্ক হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। আপনার সার্বভৌমত্ব আমরা সম্মান করব। আপনার সীমান্তের প্রতি আমাদের সম্মান থাকবে। শর্ত হলো আমার সীমান্তকে আপনাকেও সম্মান করতে হবে। আপনি যদি দেখামাত্রই গুলি মারার পলিসিতে বিশ্বাস করেন, আমি কেন আপনাকে দেখামাত্রই সালাম দেওয়ার নীতিতে থাকব? আপনি যদি আমাকে দেখামাত্রই গুলি করতে পারেন, আমি আপনাকে দেখামাত্রই গুলি না করতে পারি, অন্তত ঢিল ছুড়ে হলেও প্রতিবাদ করব।

এনসিপির এই নেতা বলেন, আমাদের বাসায় বাসায় ডিশ এন্টেনা ঢুকিয়ে, এই ভারতীয় সংস্কৃতি ঢুকিয়ে আমাদের এটা বুঝিয়েছে যে আমাদের ভারতের ওপর নির্ভর করে থাকতে হবে। কিন্তু আমাদের আত্মনির্ভর হতে হবে। এখানে তরুণ প্রজন্ম যারা আছেন, আমাদের পূর্বের প্রজন্ম লড়াই আর করবে না। তারা ফোনে যোগাযোগ রাখে, ওপেনে রাখে না। তার মানে তাদের সাহস যেটা বোঝার বুঝে গেছে। কারণ তাদের হিসাব কিতাব আছে অনেক কিছু।

‘ইন্ডিয়া নামে একটা ঠাকুর আছে, এটা বেজার হবে বলেই আমার দেশের অনেক রাজনীতিবিদ মুখে তালা দিয়ে রাখে। কিন্তু আমরা মুখে তালা দিয়ে রাখব না। এই মাটি আমাদের, স্বাধীনতা আমাদের, সার্বভৌমত্ব আমাদের।’

হাসনাত বলেন, আওয়ামী লীগের সময় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ছিল স্বামী এবং স্ত্রীর সম্পর্কের মতো। এখন ভারত এটাকে মেনে উঠতে পারছে না- হঠাৎ করে তাদের মুখোমুখি আমরা দাঁড়িয়েছি। সম্পর্ক হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। আপনি আমাকে সম্মান দেবেন আমি আপনাকে সম্মান দেব। আমি আপনাকে শুধু ফুল দিয়ে যাব, আপনি আমাকে ফেলানীর মত কাঁটা তারে ঝুলিয়ে রাখবেন, ওই ধরনের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক আর বাংলাদেশে থাকবে না।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এই অন্যতম সংগঠক বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানদের বছরের পর বছর জঙ্গি হিসেবে ভারতে ট্রিট করা হয়েছে। যারাই ভারত বিরোধিতা করেছে, তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই সিরিয়ালে আমার ভাই ওসমান হাদি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আমাদের টার্গেট করেছে। তো কী হবে? কিছুই হবে না। আমি যদি মারা যাই এমন অনেক মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাবে। আমাদের ইনসাফের লড়াই আমাদের আজাদির যে সিলসিলা এটা অব্যাহত থাকবে।

এসময় জাতীয় নাগরিক পার্টির দেবিদ্বার উপজেলার অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।