আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ১৯ আগস্ট ২০২৫ ● ৪ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ১৯ আগস্ট ২০২৫
ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব

আবুজরকে হারিয়ে বিপাকে ৩ পরিবার

রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫, দুপুর ০২:৫১

Advertisement Advertisement

নিউজ ডেস্ক: জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার পশ্চিম নয়ানগরের বাসিন্দা মৃত তারা মিয়ার ছেলে আবুজর। তিনি ছিলেন একজন প্রাইভেটকার চালক। তার ওপর নির্ভরশীল ছিল মা, নিঃসন্তান বিধবা খালা এবং নানির পরিবার। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ১৯ জুলাই পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি, মৃত্যু হয় ২৭ জুলাই। তাকে হারিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে তিনটি পরিবার।

জানা যায়, আবুজর ছিলেন প্রাইভেটকার চালক। চাকরি করতেন ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোড এলাকার একটি কোম্পানিতে। গত ১৯ জুলাই রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকায় পুলিশ গুলি করলে তা আবুজরের বুকে বিদ্ধ হয়। গুলি তার বুকের পাঁচটি স্থান ছেদ করে শরীরের অপর প্রান্তে গিয়ে থেমে যায়। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি সেখানে ২৪ জুলাই পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে মহাখালীর মেট্রোপলিটন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ২৭ জুলাই রাত ১০টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর খবরে পরিবারের পাশাপাশি খালা ও নানির মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। মা সুফিয়া বেওয়া, খালা ও নানি—তিনজনই অসহায় হয়ে পড়েন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, আবুজরের মৃত্যুর পর থেকে তার খালার অবস্থা খুবই করুণ। তার থাকার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই।

আবুজরের মা সুফিয়া বেওয়াও এখনো ছেলে হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তিনি বলেন, আমার ছেলে আর ফিরবে না। যারা আমার বুক খালি করল, আমি তাদের বিচার চাই। আমি অনেক ধৈর্য ধরেছি। আমার মতো কষ্টে আর কেউ নেই—সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।

শহীদ আবুজরের বড় ভাই শহিদুল ইসলাম বলেন, বাড়ির পাশে নতুন ঘর তুলব বলে জায়গা খালি করে রেখেছি, ইট কিনে রেখেছিলাম, আবুজরের বিয়ের জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে তার অকাল মৃত্যুতে। চিকিৎসার খরচ মেটাতে ইট বিক্রি করেছি, আরো অনেক কিছু বিক্রি করতে হয়েছে, ঋণ করতে হয়েছে। এভারকেয়ার হাসপাতালে ১১ লাখ টাকা ও মেট্রোপলিটন হাসপাতালে প্রায় তিন লাখসহ মোট ১৪ লাখ টাকার বেশি খরচ করেও ভাইকে বাঁচাতে পারিনি। কিছু সহায়তা পেলেও এখনো ঋণের বোঝা বহন করতে হচ্ছে। ভাইয়ের শোক এবং ঋণের চাপে দিশাহারা আমরা।

মন্তব্য করুন


Link copied