আর্কাইভ  রবিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ● ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
আর্কাইভ   রবিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক: মেডিকেল বোর্ড

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক: মেডিকেল বোর্ড

রাজনীতি এখন ভোটের মাঠে

► ঘরে ঘরে ছুটছেন প্রার্থীরা দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি
► গ্রাম থেকে শহরে চলছে সভাসমাবেশ মিছিল
রাজনীতি এখন ভোটের মাঠে

আসনভিত্তিক ছবিসহ ভোটার তালিকা ছাপাতে ইসির নির্দেশ

আসনভিত্তিক ছবিসহ ভোটার তালিকা ছাপাতে ইসির নির্দেশ

দেশের কল্যাণে ঐকবদ্ধ না হলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে: তারেক রহমান

দেশের কল্যাণে ঐকবদ্ধ না হলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে: তারেক রহমান

ওসমান হাদিকে গুলি: রোকেয়া পদকজয়ীদের উদ্বেগ, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ

শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, রাত ১০:০০

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  ‘বেগম রোকেয়া পদক’ জয়ীদের সংবর্ধনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এ বছর বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত রুভানা রাকিব, নাবিলা ইদ্রিস, কল্পনা আক্তার ও ঋতুপর্ণা চাকমা।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন রোকেয়া পদকজয়ীরা। একই সঙ্গে তারা সরকারকে এ ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।

তারা বলেন, আপনার কাছ থেকে সংবর্ধনা পাবো এ নিয়ে আমরা উৎফুল্ল ছিলাম। কিন্তু গতকালের ঘটনার পর আমরা গভীরভাবে বিচলিত।

নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঐক্য আরও জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার কথাও প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন তারা।

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এই হামলাটি পূর্বপরিকল্পিতভাবে চালানো হয়েছে। আমি নিয়মিত তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং ওসমান হাদির চিকিৎসার খোঁজ নিচ্ছি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে। তারাও সহযোগিতা করছে।

এরপর রোকেয়া পদকজয়ী প্রত্যেকের কাছ থেকে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্র ও চলমান কর্মকাণ্ড সম্পর্কে খোঁজ নেন প্রধান উপদেষ্টা।

শ্রম আইন সংশোধন এবং আন্তর্জাতিক শ্রম কনভেনশনে স্বাক্ষরের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান নারী অধিকারে (শ্রম অধিকার) রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত কল্পনা আক্তার। তিনি বলেন, শ্রম আইনের পরিবর্তন এবং কনভেনশনে স্বাক্ষর, এই দুটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। এত অল্প সময়ের মধ্যে আপনি এটি করে দেখিয়েছেন, সেজন্য ধন্যবাদ।

তিনি আরও বলেন, গত সরকারের আমলে আমাকে মামলা দিয়ে হেনস্তা করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা দেওয়া হয়েছিল। গুলশানের নাভানা টাওয়ার থেকে চশমা লুটের মতো অবাস্তব ঘটনায়ও আমাকে আসামি করা হয়। ট্রেড ইউনিয়ন করা কিংবা শ্রমিক অধিকারে কাজ করা কেউ রোকেয়া পদক পেতে পারেন, এটা আগে কেউ ভাবেনি। অন্তর্বর্তী সরকারকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কল্পনা আক্তার একজন শক্তিশালী নারী। তিনি সবসময় ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেন। বিশ্বজুড়ে তাকে সবাই সম্মান করে।

তিনি আরও বলেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর যা যা করা প্রয়োজন ছিল, তার অনেক কিছুই করা হয়নি। শ্রম অধিকার এবং কনভেনশন আমার অগ্রাধিকারের তালিকায় ছিল। চেষ্টা ছিল যতটুকু সম্ভব করে দিয়ে যাওয়ার।

এ সময় শ্রমিকদের বেতন, কর্মপরিবেশসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কল্পনা আক্তারের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি এবং শ্রম আইন বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কেও কথা বলেন।

গবেষক ড. রুভানা রাকিবের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিদেশি সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আইসিডিডিআরবি এবং রোহিঙ্গারা। এ বিষয়ে সরকার নিরন্তর আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।

ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমার কাছেও নারী ফুটবল দলের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নেন প্রধান উপদেষ্টা। দলের থাকা-খাওয়া, অনুশীলনের সুযোগ, নতুন খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্তি এবং তাদের পারফরম্যান্স নিয়েও কথা বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের সবাই তোমাদের নারী ফুটবল দলকে ভালোবাসে। অসংখ্য ছেলেমেয়ে তোমাদের অনুসরণ করে। তোমাকে সম্মানিত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। তোমাকে সম্মানিত করার অর্থ হলো, যারা তোমাকে অনুসরণ করে তাদেরও অনুপ্রাণিত করা।

মানবাধিকার ক্যাটাগরিতে রোকেয়া পদকজয়ী নাবিলা ইদ্রিসের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শুরু থেকেই তোমার দৃঢ়তা প্রশংসিত হয়েছে। তুমি মানুষের মধ্যে সাহস জুগিয়েছো এবং মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করেছো। আগামী দিনগুলোতেও তোমার এই লড়াই অব্যাহত থাকুক।

নাবিলা ইদ্রিস গুমের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ঘটনার তদন্ত ও বিচার আজ যে পর্যায়ে এসেছে, তা ঐতিহাসিক। আপনি না থাকলে আমরা গুম এবং জুলাই গণহত্যার বিচার দেখতে পেতাম না।

অনুষ্ঠানে রোকেয়া পদকজয়ী চারজনকে গ্রামীণ নারীদের অর্থনৈতিক সংগ্রাম ও জীবনযাত্রা নিয়ে নিজের লেখা বই ‘বেলতৈল গ্রামের জরিমন ও অন্যান্যরা’ উপহার দেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

এ সময় নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ, এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ এবং নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন


Link copied