আর্কাইভ  রবিবার ● ২৪ আগস্ট ২০২৫ ● ৯ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   রবিবার ● ২৪ আগস্ট ২০২৫
জয়ের জটিল সমীকরণ

জয়ের জটিল সমীকরণ

হাসিনার মামলায় ১৬ চানখাঁরপুল মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য শেষ

জুলাই-আগস্টে মানবতাবিরোধী অপরাধ
সীমাহীন বর্বরতা
হাসিনার মামলায় ১৬ চানখাঁরপুল মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য শেষ

ছুটিতে পাঠানো সেই ১২ বিচারপতি কোথায়?

ছুটিতে পাঠানো সেই ১২ বিচারপতি কোথায়?

হাসিনার পলায়ন উদযাপনের জনস্রোতে কেন এত গুলি, কেন এতো আক্রোশ

হাসিনার পলায়ন উদযাপনের জনস্রোতে কেন এত গুলি, কেন এতো আক্রোশ

ওসি পরিচয়ে অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা গ্রেফতার

শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, বিকাল ০৬:৪০

Advertisement Advertisement

দিনাজপুর: পুলিশের ওসি পরিচয় দিয়ে পিতা ও ছেলেকে জিম্মি করে এক লাক টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক ও তার সহযোগী আপেলকে গণধোলাই দিয়ে বিক্ষুদ্ধ জনতা পুলিশে সোপর্দ করেছে ।
এ ঘটনায় আজ শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে অন্যের পরিচয়ে অপহরণ,চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগে দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় মামলা হয়েছে।
 
 ঘটনাটি ঘটেছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪ শেখপুরা ইউনিয়নের ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুর পাড় নামক এলাকায়।
এ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে আরো ৮ জনকে।এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ আসামি রয়েছে।
 মামলার বাদি দিনাজপুর সদর উপজেলার ভাটিনা ঠাকুরবাড়ী গ্রামের শ্রী চৈতু বর্মন (৪৯)।
 চৈতু বর্মন জানান,তার ছেলে ইমন চন্দ্র বর্মণ (২২) একই গ্রামের মিতু রানী রায়ের (১৯) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর  টাঙ্গাইলে অবস্থান করেন।
এই ঘটনার জের ধরে গত ৭ জানুয়ারি কোতয়ালি থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আব্দুর রাজ্জাকসহ তার সঙ্গীয় লোকজন মাইক্রোবাস নিয়ে রাত পৌনে ১২টয় দিনাজপুর সদরের ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামে তার বাড়ি যায়। আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে কোতোয়ালি থানার ওসি পরিচয় দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে বের করেন। বলেন, 'তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, থানায় যেতে হবে।'
এ সময় চৈতু বর্মন তার পরিবারের লোকজনকে ডাকতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাকসহ তার লোকজন তাকে জোরপূর্বক আটক করে টানা হেচড়া করে সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তোলেন। জানতে চান ছেলে ইমন কোথায় আছে। তার ঠিকানা জানার পর বাদীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে টাঙ্গাইলে অপহরণ করে নিয়ে যান।
টাঙ্গাইল থেকে ছেলে ইমনসহ বাবা চৈতুকে ৮ জানুয়ারি রাত ১০টায় পুনরায় দিনাজপুর নিয়ে এসে ৪নং শেখপুড়া ইউনিয়নের মাধবপুর গোয়ালপাড়া নামক স্থানে গিয়ে শ্রী মহেশ চন্দ্র রায় নামে এক ব্যক্তির বাসায় আটক রাখে এবং শারীরিক নির্যাতন চালায়। এ সময় বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তারা।নিরুপায় হয়ে ছেলে ও নিজের জীবন রক্ষার্থে চৈতু তাদের টাকা দিতে সম্মতি প্রকাশ করেন। এজন্য এক দিনের সময় চান। আব্দুর রাজ্জাক ও সঙ্গীয় লোকজন টাকা না দিলে বা কাউকে জানাজানি করলে বিভিন্ন মামলাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ওই রাতে ছেড়ে দেয়।
 
তারই ধারাবাহিকতায় ৯ জানুয়ারি রাত ৮টায় ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও তার সঙ্গীয় মো. আপেল  তাদের সঙ্গীদের নিয়ে চৈতু  বর্মনের বাড়ি গিয়ে পিতাও ছেলে ডেকে ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুর পাড় নাম্বার স্থানে নিয়ে যায়। আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে পূণরায় ওসির পরিচয় দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করেন।
এসময় অত্র এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আব্দুর রাজ্জাক ও আপেল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের দু'জনকে আটক করে ফেলে গণধোলাই দিয়ে  জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশের বিষয়টি পুলিকে জানায়। অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। 
 
চৈতু বর্মন বাদি হয়ে ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাকসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২/৩জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আজ শুক্রবার দুপুরে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাক (৩৫) দিনাজপুর সদর উপজেলার নহনা গ্রামের মো. রুস্তম আলীর ছেলে। আটক মো.আপেল একই গ্রামের মো.শাহাদাতের ছেলে।
মামলার এজাহারে উল্লেখিত অন্যান্য আসামিরা হলেন- মো. শাহাদাত হোসেনের ছেলে মো. আপেল, মো. আব্দুস সাত্তারের ছেলে মো. শাহীনুর ইসলাম, মো. আপনের ছেলে মো. শান্ত, মো. আক্তারুল, শ্রী উজ্জ্বল রায়, শ্রী তাপস রায় এবং শ্রী মহেশ চন্দ্র রায়।
 
এ ব্যাপারে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মতিউর রহমান জানান, ‘জাতীয় জরুরি সেবায় কল পেয়ে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে বিক্ষুব্ধ জনতার কাছ থেকে আব্দুর রাজ্জাক ও সঙ্গীকে থানায় নিয়ে আসে। তাদের বিরুদ্ধে  ১৪৩/৪৪৭/৩৪২/৩২৩/৪১৯/৩৬৫/৩৮৫/৫০৬/৩৪ পেনেল কোড ১৮৬০ ধারায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের ধরত অভিযান অব্যাহত আছে।

মন্তব্য করুন


Link copied