ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চারোল ইউনিয়নের কৃষক মইনুল ইসলামকে গত শনিবার বিষাক্ত সাপে কামড় দেয়। তবে তিনি শুধু চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ছুটে যাননি, সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন সেই সাপকেও। ঘটনাটি জানাজানি হতেই পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় কৃষক মইনুল বেডে শুয়ে আছেন তার পাশে রাখা আছে সাপটি।
মইনুল ইসলাম জানান, দুপুরে উঠানে কাজ করছিলেন তিনি। এ সময় হঠাৎ একটি সাপ এসে পায়ে কামড় দেয়। বিষের ভয়াবহতা বুঝতে পেরে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাঁকে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে হাসপাতালের চিকিৎসকদের সামনে প্রমাণ রাখতেই তিনি সেই সাপটিকে সঙ্গে করে হাসপাতালে হাজির হন।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা নেওয়ার পর বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
মইনুল ইসলাম আরো বলেন, “প্রথমে খুব ভয় পেয়েছিলাম। তবে বুঝে গিয়েছিলাম হাসপাতালে না গেলে জীবন বাঁচানো কঠিন। তাই সাপকে নিয়ে এসেছি যাতে ডাক্তাররা বুঝতে পারেন কোন সাপ কামড়েছে। এখন আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।”
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডাক্তার ফুয়াদ বলেন, কেবল মইনুল ইসলাম নন, গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একই হাসপাতালে আরও পাচজন সাপে কাটার রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই ঠাকুরগাঁও সদর, বালিয়াডাঙ্গী ও রানীশংকৈল উপজেলার বাসিন্দা। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে জেলাজুড়ে সাপের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গিয়েছে।
ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ফিরোজ জামান জুয়েল জানান, সাপে কাটা রোগীদের জন্য হাসপাতালে যথেষ্ট অ্যান্টিভেনম মজুত আছে। প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে পাঁচজন সাপে কাটা রোগী ভর্তি হচ্ছেন। বর্ষা ও শরৎকালে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়।