নিউজ ডেস্ক: তিস্তা নদীতে বর্ষায় দফায় দফায় বন্যা এবং শুষ্ক মৌসুমে পানি শূন্যতার ভয়াবহ পরিস্থিতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি)।
চলতি বর্ষা মৌসুমে তিস্তায় চার দফা বন্যা হয়েছে। এতে উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জনপদ পানিতে তলিয়ে যায়। লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলায় হাজার হাজার পরিবারের বসতভিটা এবং ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বিশেষ করে রোপা আমন ধানের চারা বারবার তলিয়ে গিয়ে কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। অথচ একই নদী শীতকালে ভারতের গজলডোবা ব্যারেজ থেকে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহারের কারণে হঠাৎ শুকিয়ে যায়। ফলে কৃষি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যে ভয়াবহ সংকট দেখা দেয়।
নিউইয়র্ক ও বাংলাদেশ শাখার নেতাদের যৌথ বিবৃতিতে আইএফসি জানিয়েছে, এ বৈপরীত্য একটি মানবসৃষ্ট বাৎসরিক পরিবেশ বিপর্যয়ে রূপ নিয়েছে। লাখো মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়লেও বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা বলেন, এই সমস্যায় নীরব থাকার কোনো সুযোগ নেই, বরং রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক ফোরামে জোরালোভাবে বিষয়টি তুলে ধরা এখন সময়ের দাবি।
আইএফসি নেতারা উল্লেখ করেন, আগামী বছর ডিসেম্বরেই ৩০ বছরের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। এর আগেই বাংলাদেশকে বেসিনভিত্তিক ও সমন্বিত ব্যবস্থাপনার ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন ও কার্যকর চুক্তির জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। শুধু গঙ্গাই নয়, সব যৌথ নদীর পানিবণ্টন বিষয়ে সমাধান প্রয়োজন।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমানে ৫৪টি যৌথ নদী থেকে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারতের ভেতরেও পরিবেশগত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই এই সংকটের সমাধান দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ছাড়াও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে করতে হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন আইএফসি নিউইয়র্কের চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান, মহাসচিব মোহাম্মদ হোসেন খান, আইএফসি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমেদ, সভাপতি মোস্তফা কামাল মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদ হাসান মুকুট।