ফারজানা আক্তার
বিশ্বজুড়ে মা দিবস পালনের মধ্য দিয়ে মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা প্রকাশের একটি নির্ধারিত পরিসর গড়ে উঠেছে। তবে দিনটি কেবল আনুষ্ঠানিকতার সীমায় আবদ্ধ নয়; বরং এটি হয়ে ওঠে জীবনের গভীরে ফিরে তাকানোর এক নিঃশব্দ উপলক্ষ। একজন নারীর নিঃস্বার্থ সংগ্রাম, নিরব ভালোবাসা, আর অব্যক্ত আত্মত্যাগ উপলব্ধির এক মূল্যবান সময় ।
জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের পেছনে, প্রতিটি সাফল্যের নিচে, প্রতিটি পুনরারম্ভের উৎসে যে নীরব প্রেরণা কাজ করে—তাঁকে কেউ ডাকে মা, কেউ আম্মু বলে। তাঁর অসংখ্য ছোট ছোট ত্যাগের কোনো ইতিহাস নেই, নেই কোনো পাঠ্যবইয়ে স্থান। তবু সেই নিঃশব্দ ত্যাগগুলোই আমাদের আজকের জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে—ভালোবাসা আর আশ্রয়ের এক অদৃশ্য শক্তি হয়ে।
মা এমন এক হাত, যেটি কখনো ছেড়ে যায় না। ক্লান্ত দিন শেষে যে হাত সন্তানের মাথায় স্নেহের ছোঁয়া রাখে, দুঃখের মুহূর্তে যে হাতে জড়ানো থাকে নিঃশব্দ আশ্বাস—সে হাত শুধুই মায়ের। জীবনের যতদূরই এগিয়ে যাওয়া হোক না কেন, সেই একজোড়া হাতের অভাব কখনো পূরণ হয় না।
শিশু যখন প্রথম পৃথিবীর আলো দেখে, প্রথম যে কণ্ঠস্বর তার কানে ধ্বনিত হয়, তা মায়ের। জীবনের প্রতিটি বাঁকে, প্রতিটি চাহিদায়, প্রতিটি আঘাতে—যে মানুষটি নীরবে আগলে রাখেন, তিনিই মা। মা কোনো নির্দিষ্ট পরিচয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নন; মা মানেই এক আশ্রয়, এক নিরাপদ বন্দর।
আজকের এই মা দিবসে সমাজের প্রতিটি মায়ের প্রতি জানাই গভীর কৃতজ্ঞতা। সন্তানের প্রতি তাদের ভালোবাসা ও ত্যাগ বলে শেষ করা সম্ভব নয়। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হলো মা। তার ঋণ কখনো শোধ হওয়ার নয়। আজকে মা দিবসে তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। ভালো থাকুক তাঁরা, যারা সন্তানের মুখে হাসি দেখার জন্য সবকিছু করতে পারে, যাদের সাথে রেগে কথা বললেও মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দেয়।
'মা দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা'
তাঁদের প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা, যাঁরা নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় আমাদের গড়ে তুলেছেন—
যাঁদের হাতে আমরা প্রথম নিরাপত্তা খুঁজে পেয়েছি,
যাঁদের প্রার্থনায় লুকিয়ে থাকে সন্তানের প্রতিটি সফলতা।
'শুভ মা দিবস'
এই দিনটি হোক সব মায়ের হাসির দিন, সম্মানের দিন, ভালোবাসায় পূর্ণ একটি মুহূর্ত।
আজ নয়, প্রতিটি দিনেই তারা ভালোবাসার সবচেয়ে বড় প্রাপ্য।
লেখক: শিক্ষার্থী, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।