আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ২৬ আগস্ট ২০২৫ ● ১১ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ২৬ আগস্ট ২০২৫
রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় অবকাঠামোসহ এসিগুলো নষ্ট

রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় অবকাঠামোসহ এসিগুলো নষ্ট

উগ্রবাদ নিয়ে সতর্ক বিএনপি

উগ্রবাদ নিয়ে সতর্ক বিএনপি

তদন্ত হবে আড়ি পাতার

রাজনৈতিক সরকার এ ব্যবস্থা ধরে রাখতে চায়
তদন্ত হবে আড়ি পাতার

হাইকোর্টের বিচারপতি হলেন সারজিস আলমের শ্বশুর

হাইকোর্টের বিচারপতি হলেন সারজিস আলমের শ্বশুর

‘ট্রাম্প ট্যারিফে’র ধাক্কা সামলাতে মাত্র ১৯ দিনে ভারত কী করতে পারে?

শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫, রাত ০৮:৫৯

Advertisement Advertisement

নিউজ ডেস্ক: রাশিয়া থেকে তেল কেনার ‘অপরাধে’ বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের ওপর যে বাড়তি ২৫% শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন, সেই ধাক্কা থেকেই দিল্লি এখনও বেরোতে পারেনি। ভারতীয় পণ্যের ওপর এখন মোট মার্কিন শুল্ক হতে যাচ্ছে ৫০ শতাংশ - যে পদক্ষেপ এই ঘোষণার ঠিক তিন সপ্তাহ পর, অর্থাৎ আগামী ২৭শে আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।

এই পদক্ষেপকে ভারত সরকার বিবৃতি দিয়ে ‘অন্যায়’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে বর্ণনা করেছে যথারীতি এবং বিশ্লেষকরা সবাই প্রায় একবাক্যে বলছেন, ভারতের রফতানিমুখী বাণিজ্য ও সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর এত বড় আঘাত স্মরণকালের মধ্যে আসেনি।

ভারত ছাড়া এশিয়ার আর কোনও দেশে এত চড়া হারে মার্কিন শুল্ক বসানো হয়নি। বস্তুত এই ৫০ শতাংশ হার ভারতকে এনে ফেলেছে ব্রাজিলের সঙ্গে একই ব্র্যাকেটে – লাতিন আমেরিকার যে দেশটির সঙ্গে আমেরিকার রীতিমতো ঠান্ডা যুদ্ধ চলছে।

ভারত এই মুহুর্তে বছরে প্রায় ৮৭ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ পণ্য আমেরিকায় রফতানি করে থাকে। ট্যারিফের এই হার বজায় থাকলে তার প্রায় পুরোটাই বাণিজ্যিকভাবে ‘আনভায়াবেল’ হয়ে পড়বে – মানে অন্য দেশের পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ভারত টিকে থাকতে পারবে না।

বেশিরভাগ ভারতীয় রফতানিকারকই জানিয়েছেন, তারা বড়জোর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্কবৃদ্ধি ‘অ্যাবসর্ব’ করতে পারবেন – ফলে ৫০ শতাংশ শুল্কের ধাক্কা সামলানো তাদের জন্য কার্যত অসম্ভব এবং ‘পথে বসার সামিল’।

রফতানিতে যে ধরনের প্রভাব পড়বে

জাপানি ব্রোকারেজ ফার্ম নোমুরা এই কারণেই তাদের একটি নোটে উল্লেখ করেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ আসলে ভারতের বিরুদ্ধে একটি ‘বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা’র (ট্রেড এমবার্গো) মতো বিষয় – যা বহু ভারতীয় পণ্যের রফতানি একেবারে রাতারাতি বন্ধ করে দেবে।

বহু বছর ধরে আমেরিকাই হলো ভারতের প্রধান রফতানি বাজার – ভারতের মোট রফতানির ১৮ শতাংশই যায় মার্কিন মুলুকে, ভারতের মোট জিডিপির ২.২ শতাংশ আসে আমেরিকার বাজার থেকে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন প্রথমে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর কথা বলেছিলেন, তখনই ধারণা করা হয়েছিল জিডিপি ০.২ থেকে ০.৪ শতাংশ হ্রাস পাবে – প্রবৃদ্ধির হারও ৬ শতাংশর নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।

এখন ট্যারিফ বেড়ে ৫০ শতাংশ হওয়ায় এই ধাক্কা হতে চলেছে আরও বহুগুণ।

ভারতের ইলেকট্রনিকস ও ফার্মা রফতানিকে অবশ্য আপাতত অতিরিক্ত শুল্কের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।

তবে সিঙ্গাপুর-ভিত্তিক কনসালটেন্সি ‘এশিয়া ডিকোডেড’-এর প্রিয়াঙ্কা কিশোর বিবিসিকে বলছেন, টেক্সটাইল ও জুয়েলারির (রত্ন ও স্বর্ণালঙ্কার) মতো যে সব রফতানি পণ্য খুব ‘শ্রম-নিবিড়’ (লেবার ইনটেনসিভ), দেশের অভ্যন্তরে সেই শিল্পগুলোতে আমেরিকার শুল্কের প্রভাব পড়বে মারাত্মক।

তামিলনাডুর তিরুপুরে তৈরি পোশাক কারখানায়, কিংবা গুজরাটের সুরাটে হীরের গয়না বা স্বর্ণালঙ্কারের কারখানায় বহু শ্রমিক হয়তো কাজ হারাবেন, অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানই মুখ থুবড়ে পড়বে।

কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির রাকেশ মেহরাও স্বীকার করছেন, মার্কিন বাজারে ভারতীয় টেক্সটাইলের যে ‘কম্পিটিটিভনেস’ ছিল, সেটাই এবার অন্য প্রতিযোগী দেশগুলোর কাছে তারা খোয়াতে বসেছেন!

এখন প্রশ্ন হলো, এই অবধারিত বাণিজ্যিক বিপর্যয় সামলানোর জন্য ভারতের হাতে আদৌ কি কোনও উপায় আছে?

৫০ শতাংশ ট্যারিফ কার্যকর হওয়ার কথা আর মাত্র ১৯ দিনের মধ্যেই, এত অল্প সময়ের মধ্যে দিল্লি সত্যিই কতদূর কী করতে পারে?

মন্তব্য করুন


Link copied