আর্কাইভ  রবিবার ● ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ● ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
আর্কাইভ   রবিবার ● ১৬ নভেম্বর ২০২৫
হিরো আলম গ্রেফতার

হিরো আলম গ্রেফতার

আখতার হোসেন টাকা খেয়ে পিপি নিয়োগ দিয়েছেন : মুনতাসির মাহমুদ

আখতার হোসেন টাকা খেয়ে পিপি নিয়োগ দিয়েছেন : মুনতাসির মাহমুদ

উত্তরবঙ্গ অচল করার ক্ষমতা আমাদের আছে : শামীম পাটোয়ারী

উত্তরবঙ্গ অচল করার ক্ষমতা আমাদের আছে : শামীম পাটোয়ারী

কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা ৩ জানুয়ারি

কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা ৩ জানুয়ারি

পাশের রুমে লাশ রেখে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায় জরেজ- শামিমা

শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, বিকাল ০৭:৫৭

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হকের চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ক্লু বেরিয়ে আসছে। মূলত ব্ল্যাকমেইলিং করে ১০ লাখ টাকা আদায়ের লোভে পড়ে আশরাফুলকে হত্যা করে জরেজুল ইসলাম ও শামিমা।এই দুজন সম্পর্কে প্রেমিক-প্রেমিকা। 

হত্যা করে লাশ ২৬ খণ্ড করার আগে প্রচুর ইয়াবা সেবন করে জরেজ। এরপর হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে তাকে হত্যা করে। লাশ পাশের ঘরেই রেখে জরেজ ও শামিমা অন্য ঘরে রাত কাটায় এবং শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি জরেজুল ইসলামের প্রেমিকা শামিমা আক্তার কোহিনুরকে (৩৩) আলামতসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৩।

তার দেওয়া প্রাথমিক স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে শনিবার (১৫ নভেম্বর) কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন।

র‌্যাব জানায়, ১৪ নভেম্বর সকালে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বড় বিজরা এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে শামিমাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, ব্ল্যাকমেইলিং এবং লাশ গুমের পুরো প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন।

লে. কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন বলেন, গত ১১ নভেম্বর রাতে রংপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন ব্যবসায়ী আশরাফুল হক। তিনি একই এলাকার বন্ধু জরেজুল ইসলামের সঙ্গে ব্যবসায়িক পাওনা আদায়ের জন্য ঢাকায় আসেন। ১২ নভেম্বর সকাল থেকে তার পরিবার তার মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে।

১৩ নভেম্বর হাইকোর্ট এলাকার পানির পাম্প সংলগ্ন দুটি নীল রঙের ড্রাম থেকে ২৬ টুকরো করা এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। পরে আঙুলের ছাপ বিশ্লেষণে লাশটির পরিচয় নিশ্চিত হয়—তা ছিল নিখোঁজ আশরাফুল হকের।

গ্রেফতার শামীমা আক্তারের মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি ও জরেজ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। জরেজ তাকে জানায়—তার এক বন্ধুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে ১০ লাখ টাকা আদায় করা সম্ভব। এর মধ্যে ৭ লাখ নেবে জরেজ, ৩ লাখ পাবে শামীমা।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঘটনার এক মাস আগে থেকেই শামিমা নিহত আশরাফুলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে তাকে আকৃষ্ট করেন। নিয়মিত অডিও-ভিডিও কলে কথোপকথনের মধ্য দিয়ে তাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।

লে. কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন আরও বলেন, ১১ নভেম্বর রাতে ঢাকায় আসার পর জরেজ ও আশরাফুলের সঙ্গে ঢাকার শনির আখড়ার নূরপুর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন শামীমা। সেখানে ব্ল্যাকমেইলের উদ্দেশে আশরাফুলকে মালটার শরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। তিনি অচেতন হওয়ার পর জরেজ বাইরে থেকে শামীমা ও আশরাফুলের অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে।

 

শামীমার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ১২ নভেম্বর দুপুরে আশরাফুল পুরোপুরি অচেতন হয়ে পড়লে জরেজ তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং মুখে কসটেপ লাগায়। এরপর ইয়াবা সেবনের উত্তেজনায় জরেজ হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে তাকে হত্যা করে। লাশ পাশের ঘরে রেখেই দুজন রাত কাটায় এবং শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়।

র‌্যাব  জানিয়েছে, তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করা। তবে হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্যক্তিগত শত্রুতার বিষয় আছে কি না—তা প্রধান আসামি জরেজকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পরিষ্কার হবে।

গ্রেফতার শামিমা আক্তারকে আইনি প্রক্রিয়ার জন্য শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে র্যাব।

মন্তব্য করুন


Link copied