আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

ভাষা আন্দোলনে গান, কবিতা, গল্প, নাটক চলচ্চিত্র, স্লোগান ও লিফলেট

শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, রাত ০৯:০৫

নজরুল মৃধা 
মহান ভাষা আন্দোলন এবং একুশের চেতনা আজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠত হয়েছে। ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগকে চির স্মরণীয় করে রাখতে কবিতা, গান, স্লোগান,নাটক, গল্প,চলচ্চিত্রের ভূমিকা আজও উজ্জ্বল ভাষ্মর হয়ে আছে। সাহিত্য,সংস্কৃতির প্রতিটি অঙ্গই ভাষা শহীদদের চিরজীবী  করে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ভাষা দিবস নিয়ে প্রধানতম কিছু কবিতা, গান,স্লোগান নাটক,গল্প ও চলচ্চিত্রের কথা তুলে ধরতে চাই।  প্রথমে  শুরু করতে চাই গান দিয়ে। কারণ ভাষা আ্েন্দালনের গান বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেরণার উৎস।

গান
“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়া একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি।”
কালজয়ী এই গানে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্র“য়ারি মহান আত্মত্যাগের কথা ফুটে উঠেছে। সাংবাদিক ও লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী ওই দিনেই গানটি রচনা করেন। প্রথমে আবদুল লতিফ গানটিতে সুরারোপ করেন। পরে আলতাফ মাহমুদ এই গানটিতে সুরারোপ করেন। বর্তমানে এটি ভাষা শহীদ স্মরণে সবচেয়ে জনপ্রিয় গান।  এই গানটি ইংরেজি হিন্দি, মালয়,  ফ্রেঞ্চ, সুইডিশ, জাপানিসহ বেশকটি ভাষায় গাওয়া হয়েছে। 
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ভাষা আন্দোলনকারী ছাত্রদের মিছিলে গুলি চালায় ।  শহীদ হয় সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরো  অনেকে। সেসময় ঢাকা কলেজের ছাত্র আবদুল গাফফার চৌধুরী ঢাকা মেডিকেলে যান আহত ছাত্রদের দেখতে। মেডিকেলের আউটডোরে তিনি মাথার খুলি উড়ে যাওয়া ভাষাশহীদ রফিকের লাশ দেখতে পান।  সেই লাশ  দেখে তার মনে হয় এটি তার ভাইয়ের লাশ। 
তৎক্ষণাৎ তার মনে গানের প্রথম দুটি লাইন জেগে ওঠে।  এর পরে তিনি গানটি লেখেন। ভাষা আন্দোলনে প্রথম প্রকাশিত লিফলেটে এটি 'একুশের গান' শিরোনামে প্রকাশিত হয়। এই গান গাওয়া  ও লেখার অপরাধে  সে সময় ঢাকা কলেজ থেকে ১১জন ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাজ্ঞ্যাপন করে এই গানটি গাওয়া হয়।  এই গান ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়।  
১৯৫৩ সালে প্রথম শহীদ দিবসের প্রথম প্রভাতফেরিতে গাওয়া হয়- ‘মৃত্যুকে যারা তুচ্ছ করিল/ভাষা বাঁচাবার তরে/আজিকে স্মরিও তারে।’ গানটির রচয়িতা বরিশালের প্রকৌশলী মোশারেফ উদ্দিন আহমদ। ৫৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে লেখা হয়েছিল এ গান। 
ভাষাসৈনিক গাজীউল হক রচনা করেছেন ‘ভুলব না, ভুলব না, একুশে ফেব্রুয়ারি ভুলব না’। ৫৩ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি আরমানিটোলা ময়দানে আয়োজিত এক জনসভায় গানটি প্রথম গাওয়া হয়। ১৯৫৩-৫৪ সাল পর্যন্তওই গানটি গেয়েই প্রভাতফেরি করা হতো। গানটির সুরকার ছিলেন গাজীউল হক নিজেই। গানটি ওই সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
মানিকগঞ্জের সংগীতসাধক মহিন শাহ ও সাইদুর রহমান বয়াতি, কুষ্টিয়ার সংগীতসাধক মকছেদ আলী সাঁই, চট্টগ্রামের সংগীতসাধক আবদুল গফুর হালী, ফরিদপুরের সংগীতসাধক আবদুল হালিম বয়াতি, সংগীতসাধক শাহ আবদুল করিম সবাই ভাষা-আন্দোলনে গান রচনা ও পরিবেশন করে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে গেছেন।  
লালন-ঘরানার সাধক কবি মহিন শাহ গেয়েছিলেন-
“আ-মরি বাংলা ভাষা
মা বলা ডাক মধুর লাগে
মায়ের গলা ধরে
মা মা বোলে পুলক জাগে”
শাহ আবদুল করিম ভাষা-শহীদ স্মরণে লিখেছেন,
“সালাম আমার শহীদ স্মরণে
দেশের দাবী নিয়া দেশপ্রেমে মজিয়া
প্রাণ দিলেন যে সব বীর সন্তানে॥
ভাষার দাবী লইয়া আপনহারা হইয়া
গেলেন রাখিয়া বাঙ্গালীর মনে
সালাম বরকত জব্বার প্রিয় সন্তান বাংলার
ভুলিবার নয় ভুলি কেমন”
সাইদুর রহমান বয়াতি লিখেছেন,
‘জন্মভূমি মায়ের ভাষা বলতে কেন দাও বাধা
তোমাদের কি হয় মাথা বেথা?
হায়রে বনের পাখি বনে থাকে
যার যার ভাষায় সেই ডাকে
তাতেই খুশি আল্লাপাকে
বুলিতে তার নাম গাথা॥
জারি পালা গান লিখেছেন ভাবসাধক আবদুল হালিম বয়াতি। 
“উর্দু হবে রাষ্ট্রভাষা জিন্নাহ সাহেব কয়
ছাত্ররা সোচ্চার হয়ে প্রতিবাদ জানায়
বাংলা হবে রাষ্ট্রভাষা উর্দু আমরা মানি না॥
জিন্নাহর সাথে নাজিমুদ্দিন মুসলিম লীগ আর নুরুল আমিন
উর্দুভাষা চাইল সেদিন বাংলাভাষা চাইল না॥”
এসব গান সে সময় দেশের শিক্ষিত, অশিক্ষিত তথা সর্ব সাধারণের নিকট গ্রহণ যোগ্য হয়ে উঠেছিল। ভাষা আন্দোলনের এই গানগুলোর রেশ ধরে বাঙ্গালীকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জবিত করেছিল। গানের পাশাপাশি কবিতাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। বাংলা সাহিত্যে অন্যান্য শাখাকে নিযে যেমন অসংখ্য কবিতা লেখা হয়েছে। তেমনি ভাষা আন্দোলন নিয়ে অসংখ্য কবিতা লেখা হয়েছে। ভাষাকে নিয়ে আন্দোলনের শুরু থেকে এখন পর্যš কবিতা লেখা চলছেই।   
কবিতাঃ 
৫২’র ভাষা আন্দোলন নিয়ে প্রথম কবিতা রচিত হয় চট্টগ্রামে। ‘কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ শিরোনামে ১২০ লাইনের কবিতা লেখেন মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী। এই কবি বাঙ্গালী জাতির মধ্যে প্রতিশোধের স্পৃহা জাগিয়ে তোলে। 
‘যারা গুলি ভরতি রাইফেল নিয়ে এসেছিলো ওখানে
যারা এসেছিলো নির্দয়ভাবে হত্যা করার আদেশ নিয়ে
আমরা তাদের কাছে
ভাষার জন্য আবেদন জানাতেও আসিনি আজ
আমরা এসেছি খুনি জালিমের ফাঁসির দাবি নিয়ে।’
একুশে ফেব্র“য়ারিকে স্মরণ করে সাহিত্যিক আলাউদ্দীন আল আজাদ লিখেছেন ‘স্মৃতিস্তম্ভ’ কবিতাটি। 
‘ইটের মিনার ভেঙেছে ভাঙুক। একটি মিনার গড়েছি আমরা
চার কোটি কারিগর
বেহালার সুরে রাঙা হৃদয়ের বর্ণলেখায়।
পলাশের আর
রামধনুকের গভীর চোখের তারায় তারায়
দ্বীপ হয়ে ভাসে যাদের জীবন,যুগে যুগে সেই শহীদের নাম।
এঁকেছি প্রেমের ফেনিল শিলাায়, তোমাদের নামে।
তাই আমাদের
হাজার মুঠির বজ্র শিখরে সূর্য্যরে মতো জ্বলে শুধু এক শপথের ভাস্কর।’
কবি আবদুল মান্নান সৈয়দ লিখেছেন,
‘পাড়ায় পাড়ায় নাটক ব্রতচারী নাচ
মুকুলের মাহফিল-কৃষ্ণচূড়া আর পলাশ ফুল
আর সবুজের স্বরগ্রাম :
কলাপাতা-সবুজ, ফিরোজা, গাঢ় সবুজ, নীল,
তারই মধ্যে বছরের একটি দিনে
রাস্তায় রাস্তায় উঠে আসে মুষ্টিবদ্ধ হাত’
‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই! রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই!’
কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ লিখেছেন ‘মাগো ওরা বলে’ । 
‘ৃচিঠিটা তার পকেটে ছিলো/ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা/
মাগো, ওরা বলে/সবার কথা কেড়ে নেবে/
তাই কি হয়?/তাইতো আমার দেরি হচ্ছে।/
তোমার জন্য কথার ঝুরি নিয়ে/তবেই না বাড়ি ফিরবোৃ’
কবি শামসুর রাহমানের লিখেছেন, ‘বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে’ কবিতাটি। 
‘ৃবাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে চোখে ভেসে ওঠে/
কত চেনা ছবি; মা আমার দোলনা দুলিয়ে কাটছেন ঘুম পাড়ানিয়া ছড়াৃ
নানী বিষাদ সিন্ধু স্পন্দে দুলে দুলে রমজানি সাঁঝে ভাজেন ডালের বড়া
আর একুশের প্রথম প্রভাত ফেরি, অলৌকিক ভোর।’
কবি মহাদেব সাহা লিখেছেন,
‘একুশের রাজপথ জুড়ে এতো রঙিন আল্পনা আঁকা
তোমরা কি জানো সে তো নয় কোনো রঙ ও তুলির ব্যঞ্জনা কিছু
এই আলপনা, পথের শিল্প শহীদের তাজা রক্তের রঙ মাখা!’
এছাড়া পল্লাী কবি জসীমউদদীনের ‘একুশের গান’, ‘মাজহারুল ইসলামের ‘স্বাগত ভাষা’, ‘সুফিয়া কামালের ‘এমন আশ্চর্য দিন’, কায়সুল হকের ‘একুশের কবিতা’, হাসান হাফিজুর রহমানের ‘অমর একুশে’, মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহর ‘স্মৃতির মিনার’, আল মাহমুদের ‘একুশের কবিতা’, আসাদ চৌধুরীর ‘ফাগুন এলেই’, সৈয়দ শামসুল হকের ‘একুশের কবিতা’  একুশের চেতানাকে জাগ্রত করেছে। 

নাটকঃ
একুশের প্রথম নাটকের নাম ‘কবর’। নাটকটি লিখেছিলেন বুদ্ধিজীবী, নাট্যকার অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী। ভাষা আন্দোলনে জড়িত থাকার অপরাধে ১৯৫২ সালে জেলে আটক ছিলেন মুনীর চৌধুরী ও রণেশ দাশগুপ্তসহ অনেক লেখক-সাংবাদিক। রণেশ দাশগুপ্ত অন্য সেলে আটক মুনীর চৌধুরীকে ভাষা আন্দোলনের ওপর একটি নাটক লিখে দেওয়ার অনুরোধ করে একটি চিরকুট পাঠান। মুনীর চৌধুরী ’৫৩ সালের ১৭ জানুয়ারি নাটকটি লিখে শেষ করেন। ওই বছরের ২১ ফেব্র“য়ারি রাত ১০টায় কারাগারের কক্ষগুলোর বাতি নিভিয়ে দেয়ার পর হ্যারিকেনের আলো-আঁধারিতে মঞ্চস্থ হয় ‘কবর’। এতে অভিনয়ে অংশ নেন জেলেবন্দী সংগ্রামী বন্দী নলিনী দাস, অজয় রায় প্রমুখ।

গল্পঃ
 ভাষা আন্দোন নিয়ে বিস্—র গল্প লেখা হয়েছে। তবে ভাষা আন্দোলনের স্মরণে লিখিত প্রথম গল্পের নাম ‘মন ও ময়দান’। এর রচয়িতা হলেন ভাষাসৈনিক ও বিশিষ্ট কথাশিল্পী মরহুম শাহেদ আলী। ১৯৫০ সালে সাপ্তাহিক সৈনিকের ‘ঈদ ও আজাদী দিবস’ সংখ্যায় গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এছাড়া ২১ ফেব্র“য়ারি স্মরণে বিশিষ্ট কবি ও কথাশিল্পী শওকত ওসমান লিখেছেন ‘মৌন নয়ন’ । ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত একুশের প্রথম সংকলন ‘একুশে ফেব্র“য়ারি’গ্রন্থে গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয়।

চলচিত্র:
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বেশ কিছু চলচ্চিত্র নির্মিত হলেও ভাষা আন্দোলনকে প্রধান্য দিয়ে শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘বাঙলা’ চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আহমেদ ছফার ‘ওংকার’ উপন্যাস নিয়ে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ব্যানারে নির্মিত হয় ‘বাঙলা’। হুমায়ুন ফরীদি, মাহফুজ আহমেদ, শাবনূর অভিনীত এ ছবির শেষ দৃশ্যে একজন বোবা মেয়ের মুখ থেকে বের হয়ে আসে একটি শব্দ, আর সেটি হচ্ছে ‘বাঙলা’। ‘জীবন থেকে নেয়া’ এবং ‘বাঙলা’র বাইরে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র  নির্মিত হয়নি ভাষা অন্দোলন নিয়ে। তবে চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ নামে একটি ছবি নির্মাণের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তান সরকার এ ছবি নির্মাণের অনুমতি দেয়নি। আরেক বরেণ্য চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন ‘শহীদ আসাদ’ নামে একটি ছবি নির্মাণের ঘোষণাও দিয়েছিলেন। কুমিল্লার এক জনসভায় মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীকে দিয়ে এ ছবির মহরতও করেছিলেন। তৎকালীন পাক সরকার অনুমতি না দেয়ায় চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়নি।  স্বাধীনতার দেড় মাস পর জহির রায়হান-এর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হলে ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ ছবির সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। অন্যদিকে ‘শহীদ আসাদ’ ছবিটির পরিকল্পনা থামিয়ে দিয়ে আমজাদ হোসেনও।

স্লোগানঃ
৫২ ভাষা আন্দোলনে প্রধানত এখন চারটি স্লোগান এখনো বিস্মৃতি হয়নি। সেগুলো হেেচ্ছ ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ ‘রাজবন্দীদের মুক্তি চাই’ ‘শহীদ স্মৃতি অমর হোক’ এবং ‘সর্বস্তরে বাংলা চালু কর’। প্রতিটি স্লোগানই বাঙ্গলী জাতিকে উজ্জিবিত করেছে। স্লোগানগুলো সেই সময়ের  রাজনৈতিক, সামাজিক,আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক স্বার্থের সাথে জড়িয়ে ছিল। গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে জাতিকে নব চেতনা এনে দিয়েছিল এই স্লোগানগুলো। সে সময়কার পাকিস্তানি শাসকদের দুঃশাসনের ফলে  কারাগারে বন্দি, রাজবন্দিদের মুক্তির দাবি জোরালো করেছিল স্লোগানগুলো। 

লিফলেটঃ 
২১ ফেব্রুয়ারি গুলিতে হতাহত হওয়ার তিন চার ঘণ্টার মধ্যেই একটি লিফলেট প্রকাশিত হয়। ওই দিনই সন্ধ্যায় আলাউদ্দিন আল আজাদ, মুস্তফা নূরউল ইসলাম, ফজলে লোহানী, হাসান হাফিজুর রহমান পাটুয়াটুলির ‘সওগাত’ পত্রিকার অফিসের বিপরীত গলিতে অবস্থিত পাইওনিয়ার প্রেসে যান। দুটি টেবিলে বসে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তাঁরা লিখে ফেলেন কয়েকটি প্রবন্ধ ও নিবন্ধ। তাৎক্ষণিকভাবে তৈরি হয়ে যায় একটি বুলেটিন। ‘বিপ্লবের কোদাল দিয়ে আমরা অত্যাচারী, শাসকগোষ্ঠীর কবর রচনা করব।’ ওই লিফলেটের লেখক ছিলেন আলাউদ্দিন আল আজাদ। এটি সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন কবি হাসান হাফিজুর রহমান। রাতেই লিফলেটটি বিশ্ববিদ্যালয় ও পলাশী ব্যারাক এলাকায় বিলি করে ভাষা আন্দোলনের কয়েকজন কর্মী।

মন্তব্য করুন


 

Link copied