আর্কাইভ  শনিবার ● ১২ জুলাই ২০২৫ ● ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
আর্কাইভ   শনিবার ● ১২ জুলাই ২০২৫
সারা দেশের সঙ্গে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকা

ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব
সারা দেশের সঙ্গে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকা

সারা দেশ উত্তাল ছিল ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে

ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব
সারা দেশ উত্তাল ছিল ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে

‘পানি খাওয়াতে মিরপুর থেকে এসে ফার্মগেটে হিটস্ট্রোক করেন আঙ্কেল’

ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব
‘পানি খাওয়াতে মিরপুর থেকে এসে ফার্মগেটে হিটস্ট্রোক করেন আঙ্কেল’

সড়ক-রেলপথ অবরোধ, শাহবাগে কর্মসূচি

ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব
সড়ক-রেলপথ অবরোধ, শাহবাগে কর্মসূচি

শেখ হাসিনার জন্মদিনকে “জাতীয় উন্নয়ন দিবস” হিসেবে ঘোষণা করা হোক

মঙ্গলবার, ৫ অক্টোবর ২০২১, বিকাল ০৬:৩৪

Advertisement

মোঃ জুবায়ের ইবনে তাহের বাংলাদশে গত ১০/১১ বছরে দেশের যত উন্নয়ন হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে তার আগের চল্লিশ বছরের মোট উন্নয়নকে ছাড়িয়ে গেছে। অধিকিন্তু, যদি ১৯৯৬-২০০১ সরকারকে যুক্ত করা হয়, তবে দ্বিধাহীনচিত্তে বলা যায় যে, স্বাধীন বাংলাদেশের ৭০ ভাগ উন্নয়ন হয়েছে শেখের বেটির হাত ধরেই।

উল্লেখ যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শাসনামল ছিল মূলত জাতিকে পুনর্গঠনের সময়। সেই সাথে গৃহযুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা এবং যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে গিয়ে তিনি উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে যথেষ্ট সময় দিতে পারেননি। তবে তিনি বাঙ্গালি জাতির জন্য সংবিধানের মূলনীতি এবং কতিপয় প্রসাশনিক সংস্কারের মাধ্যমে ভবিষ্যত সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য রূপরেখা তৈরি করতে পেরেছিলেন; যার নাম তিনি দিয়েছিলেন “সোনার বাংলা”। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া আদর্শ পরবর্তীতে অনুসৃত না হওয়ায় দীর্ঘ ২১ বছর বাংলদেশে উন্নয়ন হয়েছে অত্যন্ত ধীরে এবং পরিকল্পনাহীন, ঠিক যেন লক্ষ্যহীন গন্তব্যের দিকে। জাতির জনকের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মত সরকারে এসে উন্নয়নের চাকাকে তরান্বিত করেন। তিনি ব্যাপক হারে বেসরকারী বিনিয়োগে উৎসাহিত করেন, রেল, বিমানের মতো সরকারী সেবাখাতগুলোকে পর্যন্ত বেসরকারী অংশীদারিত্বের সাথে যুক্ত করেন। Public Administration Reform Commission (PARC) গঠনের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যাবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেন। আজকে দুদক, ভোক্তা অধিকার পরিষদ, তথ্য অধিকার আইন, সিটিজেন চার্টার প্রভৃতি যে প্রতিষ্ঠান ও সেবার সাথে পরিচিত হয়েছি , তা মূলত PARC এর ফসল।

দীর্ঘ আট বছরের নৈরাজ্য, অনির্বাচিত অবৈধ সরকারের শাসন আর জঙ্গীবাদে জর্জরিত দেশের মানুষ যখন বৈশ্বিক মন্দার ফলে ৫০ কেজি টাকা মোটা চাল আর মাত্র কয়েক বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ নিয়ে এক সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের দারপ্রান্তে , ঠিক তখনই একজন দেবদূত দিনবদলের স্বপ্ন নিয়ে হাজির হলেন বিপর্যস্ত এই জাতির সামনে । তিনি আর কেউ নন, তিনি আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর ’সোনার বাংলা’ ধারনার যেই অধৃনিক সংস্করণ যেই দিনবদলের নির্বাচনী ইসতেহার ঘোঘণা করেছিল, সেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ই আজ বাংলাদেশের মানুষের ক্ষুধামুক্ত-দরিদ্রমুক্ত, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশের সনদ হয়ে দাড়িয়েছে। ইতিহাসে এই সনদকে কেবল বঙ্গবন্ধু’র ছয় দফার সাথেই তুলনা করা যায় , যেই সনদ আমাদের দিয়েছিল একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ।

২০০৯ সালে জাতির জনকের কন্যা ২য় বারের মত সরকারে আসার পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা অতি দ্রুত বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে বাংলাদেশ। হাজার চড়াই, উতরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। । গত এক যুগে আশি লক্ষ্য মানুষের দারিদ্র মোচন হয়েছে, মাথাপিছু আয় তিনগুনের বেশি বেড়ে দাড়িয়েছে প্রায় ২২০০ ডলার , জিডিপি সাড়ে তিন গুন বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩৫০ বিলিয়ন ডলার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সাতগুন বেড়ে দাড়িয়েছে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলারে, নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশ আজ নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে পরিনত হয়েছে। এত কম সময়ে এতবড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির রেকর্ড পৃথিবীতে খুব কমই আছে। আর এসবই সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার দুরদর্শী রাজনৈতিক নেততৃত্বের কারণে। তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বনাম দক্ষ্য মানবসম্পদ; মুক্তবাজার অর্থনীতি বনাম রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত জনকল্যানমূল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা; বেসরকারী বিনিয়োগ,বানিজ্য,উদ্দ্যোক্তা সৃষ্টি বনাম শক্তিশালী,উদ্ভাবনী ও জনসেবা কেন্দ্রিক শক্তিশালী প্রশাসনিক ব্যাবস্থার মধ্যে এত সুন্দরভাবে সমন্বয়সাধন করেছেন যে, এর সুফল এসেছে প্রত্যাশার থেকেও অনেক বেশি।

আজ থেকে এক যুগ আগে পাকিস্থান বাংলাদেশের থেকে দ্বিগুন ধনী ছিল, এমনকি তাদের রিসোর্সও ছিল বাংলাদেশের থেকে অনেক বেশি। তথাপি শুধুমাত্র রাজনৈতিক নেত্তৃত্বের ব্যর্থতার কারণে সে আজ পিছনে পরে গেছে, আজ বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে ৪৫% বেশি ধনী । শেখের বেটির স্বপ্ন এবার ২০৪১ সালের মধ্যে দেশবাসীকে একটি দারিদ্রমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ উপহার দেবার , যেই লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই তিনি ’রূপকল্প ২০২১’ এর সাফল্যের ধারাবাহিকতায় তৈরি করে ফেলেছেন ’রূপকল্প ২০৪১’। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪১ তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। পদ্মা সেতু যিনি নিজের একক সিদ্ধান্তে করে ফেলতে পারেন, উন্নত বাংলাদেশের উপহার দেয়ার সামর্থ্য একমাত্র তারই আছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। জীবনের মায়া ত্যাগ করে বাঙ্গলার ,মাটি-মানুষকে ভালবেসে রাত-দিন কাজ করে যাওয়া সেই মানুষটিই হলেন মাদার অফ হিউমিনিটি, জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।

আজকে এই মহীয়সী বাঙ্গালীর ৭৫ তম জন্মদিন। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনকে “জাতীয় উন্নয়ন দিবস” হিসেবে ঘোষণা কার জোর দাবি ব্যাক্ত করছি।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, লোকপ্রশাসন বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।  ই-মেইল: jubaerbrur@gmail.com

মন্তব্য করুন


Link copied