নিউজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগের তওবা করার সুযোগ ছিল, গোপালগঞ্জের ঘটনার পর পণ্ড হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। আজ শুক্রবার বিকেলে ৪টার নারায়ণগঞ্জের পথসভায় এই মন্তব্য করেন তিনি।
গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও জাতীয় নাগরিক পার্টির মাসব্যাপী ‘দেশ গড়তে, জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে বিকেলে নারায়ণগঞ্জের পথসভায় যোগ দেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। শহরের নিতাইগঞ্জ থেকে শুরু হয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে পদযাত্রাটি বি-বি রোড হয়ে চাষাঢ়া বিজয় স্তম্ভ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বিজয় স্তম্ভের সামনে পথসভায় বক্তব্য রাখেন, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, দলের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, এনপিসির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ অন্যান্য নেতারা।
এ সময় দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের স্বপ্ন পূরণ হবে আমাদের মৃত্যুর পর। তাদেরকে জনগণ যেভাবেব উৎখাত করেছে। আওয়ামী লীগের তওবা করার সুযোগ ছিল গোপালগঞ্জের ঘটনার পর তা পণ্ড হয়ে গেছে। হাসিনার সময় যারা পয়সার জন্য নিজের মগজ বিক্রি করে দিয়েছিল, তারা জ্ঞান পাপী। আমরা শুরু করেছি, আপনাদের শেষ করতে হবে।’
এনপিসির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা এখানে সেই মানুষরাই এসেছি, যারা জুলাইয়ে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত ছিলাম। কোনো সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলা করে লাভ হবে না। ভারতীয় সকল এজেন্ট আমাদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এরা ভারতীয় দল। কেয়ামত পর্যন্ত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের আর কোনো রাজনীতি করার সুযোগ নেই। নীতিগতভাবে আমরা দেশ পরিচালনা করতে যে কার্যক্রম শুরু করেছি তা বাস্তবায়ন করতে হবে। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জায়গাতেও আওয়ামী লীগের, ফ্যাসিস্টদের জায়গা হবে না।’
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, ‘আমরা বলেছিলাম বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনার সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে। নারায়ণগঞ্জের কিছু পরিবার বছরের পর বছর নিয়ন্ত্রণ করেছে। দখলদারি চাঁদাবাজি করেছে। গত রাতে তোরণ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগুন দেওয়া হয়েছে। সরকারের কাছে জবাব চাই। নারায়ণগঞ্জে যে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য করা হয়েছিল আমরা তা ভেঙে দিব।’
নাহিদ বলেন, ‘জুলাইয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রতিবাদের গর্জন উঠেছিল। প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জের এ অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আজ ১৮ জুলাই গত বছর কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল, আজ এই দিনে মুগ্ধ শহীদ হয়েছিল। আরেকটা গণঅভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নেন। নারায়ণগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেনো ঠিক হচ্ছে না, আমরা সরকারের কাছে এর জবাব চাই। জুলাই শহীদ আহতদের পরিবারের বাসায় গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছে। আমরা কোনো হুমকি কে ভয় পাই না, ভয় পাই নাই কখনও, ভয় পাব না, আগামী তো ভয় পাব না। নারায়ণগঞ্জবাসীর বুকের রক্ত দিয়ে সন্ত্রাসীদের এবং আওয়ামী লীগকে প্রতিরোধ করেছিল। নারায়ণগঞ্জে ৫৬ জন শহীদ হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে।
নারায়ণগঞ্জকে যানজটমুক্ত চাঁদাবাজমুক্ত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম।
এনসিপির নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল আমিনের সভাপতিত্বে পথসভায় অংশ নেন মুখ্য সমন্বয়ক নাসীর উদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।