বেরোবি প্রতিনিধি: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সক্রিয় সদস্য মীর তামান্না সিদ্দিকাকে সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা থেকে বিরত রাখতে প্রক্টরের নিকট লিখিত আবেদন করেছেন তারই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
গতকাল রোববার (৩১ আগস্ট) ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপত্তা ও অ্যাকাডেমিক ফলাফল নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এ আবেদন দাখিল করেন।
সোমবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান।
আবেদনে বলা হয়,পূর্বে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্র উপদেষ্টা ও রেজিস্ট্রার বরাবর বেশ কয়েকটি অভিযোগ করলে উল্টো তাদের উপর চাপ ও হুমকি আসতে থাকে।
অভিযোগপত্রে তারা আরো বলেন, প্রায় ৪ মাস আগে তাদের বিভাগের সেশনজট সমস্যা নিয়ে তারা কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে একটি অভিযোগপত্র রেজিস্ট্রার এবং ছাত্র-উপদেষ্টা নিকট জমা দেন । কিন্তু সেই অভিযোগপত্র প্রশাসন থেকে ফাঁস হয়ে তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান মীর তামান্না সিদ্দিকার হাতে পৌঁছে যায়।
এরপর থেকে তিনি অভিযোগকারীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া, রেজাল্ট খারাপ করে দেওয়া, ভবিষ্যতে চাকরির ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করার হুমকি দিয়ে আসছেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়, বিষয়টি তারা উপাচার্য কে জানালে তিনি বিষয়টি সমাধান করবেন বলে জানান।
উপাচার্য মৌখিকভাবে প্রতিশ্রুতি দেন যে, এ শিক্ষককে অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের ব্যাচে আর কোনো দায়িত্বে (পরীক্ষা পরিদর্শক, কোর্স টিচার, সেকেন্ড এক্সামিনার ইত্যাদি) থাকবেন না।
তার এই আশ্বাসের কয়েকমাস পর এখন নতুন করে আবার ওই শিক্ষককে বিভিন্ন দায়িত্ব প্রধান করায় আবারো শিক্ষা জীবন নিয়ে হুমকির মুখে ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগে বলা হয়, এ শিক্ষক ইচ্ছাকৃতভাবে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৪০ জনকে ৩.০০-এর নিচে গ্রেড দিয়েছেন এবং অনেককেই ফেল করিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মীর তামান্না সিদ্দিকা আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এছাড়াও তিনি আওয়ামী আমলে প্রক্টর ও মেয়েদের একমাত্র হল ফেলানী হলের (সাবেক বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল) প্রভোসটের দায়িত্বেও ছিলেন।
নাম প্রকাশে না করা শর্তে ওই বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, অভিযোগ দিয়ে বারবার হয়রানির শিকার হচ্ছি। এপ্রিলে অভিযোগ করি সেই অভিযোগ ফাঁস হয়ে যায়। এতে বিভাগের শিক্ষক তামান্না ম্যাম আমাদের ওপর আরও চড়াও হন। এখন আমরা সবাই নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
এ ব্যাপারে প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, অভিযোগ ফাঁস হওয়ার পর ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তর থেকে সেই কর্মকর্তাকে আমরা বদলি করি। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। গতকাল যে আবেদন আসছে সেটি আমরা দেখব। সেই অনুযায়ী প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।