আর্কাইভ  সোমবার ● ১ ডিসেম্বর ২০২৫ ● ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ১ ডিসেম্বর ২০২৫
এক মামলায় হাসিনার ৫, রেহানার ৭ ও টিউলিপের ২ বছর কারাদণ্ড

পূর্বাচলে প্লট জালিয়াতি
এক মামলায় হাসিনার ৫, রেহানার ৭ ও টিউলিপের ২ বছর কারাদণ্ড

হাসিনা-রেহানা ও টিউলিপ কেন আইনজীবী পাননি, ব্যাখ্যা দিলেন আদালত

হাসিনা-রেহানা ও টিউলিপ কেন আইনজীবী পাননি, ব্যাখ্যা দিলেন আদালত

বিএনপি খালেদা জিয়ার অবস্থা ‘স্থিতিশীল’, যোগ দেবেন চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা

অপতথ্য নিয়ে সতর্ক
বিএনপি খালেদা জিয়ার অবস্থা ‘স্থিতিশীল’, যোগ দেবেন চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা

রংপুরে বিগত দিনের তথাকথিত নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হতে দেয়া হবে না : পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন

রংপুরে বিগত দিনের তথাকথিত নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হতে দেয়া হবে না : পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন

সম্পত্তির জন্য বাবার মরদেহ আটকে রাখলো ছেলে, ২৩ ঘন্টা পর দাফন

সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫, বিকাল ০৭:৪৮

Advertisement

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ ছিলো চারবোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে। এ কারণে একমাত্র ছেলের কাছে আশ্রয় না পাওয়া বাবা বৃদ্ধ বয়সে ছিলেন মেয়ের বাড়ীতে। সেখানে মারা যাওয়ার পর মরদেহ নিজ বাড়ীতে দাফনের জন্য নিয়ে আসা হলে গ্রহণ করেনি ছেলে। অনুমতি না মেলায় কবর খুড়তে পারেনি আত্মীয়-স্বজনরা। 
 
২৩ ঘন্টা পর সোমবার বিকাল ৪টায় স্থানীয়দের উদ্যোগে ও থানা পুলিশের পরামর্শে দাফন হয়েছে মরদেহ। ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। তবে সম্পত্তির কারণে বাবার মরদেহ একা ফেলে রাখা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে। 
 
খোজ নিয়ে জানা গেছে, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দু্ওসুও ইউনিয়নের পশ্চিম সরলিয়া গ্রামের তসলিম উদ্দীন (৭০)। একমাত্র ছেলে ভরণ পোষণ না করায় মহিষমারী গ্রামে মেয়ে বিউটি আক্তারের বাড়ীতে দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন। বিউটি আক্তার তার দেখাশুনা এবং চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। 
 
রবিবার সন্ধ্যায় বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান তসলিম উদ্দীন। আত্মীয় স্বজনদের জানিয়ে রাতেই দাফন করার জন্য মরদেহ আনা হয় পশ্চিম সরলিয়া গ্রামে নিজ বাড়ীতে। কিন্তু ছেলে মহসিন আলী বাবার মরদেহ বাড়ীতে ঢুকাতে দেয়নি। চাচার বাড়ীতে রাখা হয় রাতভর। 
 
স্থানীয়রা জানান, মেয়েদের নামে সম্পত্তি লেখে দেওয়ার কারণে তসলিম উদ্দীনের ছেলে মহসিন আলী বাবার মৃত্যু স্বাভাবিক হয়নি অভিযোগ তুলে রবিবার রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরে মরদেহ দাফন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। স্থানীয়দের অনুরোধে মরদেহ নেয়া হয় ছেলের বাড়ীতে। 
 
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহসিন আলীর বাড়ীর বারান্দায় খাটিয়ার উপর তসলিম উদ্দীনের মরদেহ রয়েছে। একটি ফ্যানের বাতাস গায়ে দেওয়া হয়েছে। পাশে দুটি চেয়ার পড়ে আছে ফাঁকা। মরেদহর পাশে কোন আত্মীয়-স্বজনকে দেখা যায়নি। বাড়ীতে কথা বলতে চেষ্টা করলেও কেউ মুখ খুলেনি। কথা বলতে চায়নি মরদেহ পড়ে থাকা নিয়ে। 
 
বালিয়াডাঙ্গী থানায় দেখা হয় ছেলে মহসিন আলীর সাথে। তিনি জানান, বাবা বোনের বাড়িতে মারা যাওয়ায় সন্দেহ হয়েছিল। এ কারণে থানায় অভিযোগ করেছি। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ আগের। এইখানে সম্পত্তির কোন বিষয় নয়। এখন আমরা সবাই আপোষ হয়ে গেছি। 
 
দু্ওসুও ইউনিয়নের  ইউপি সদস্য হবিবুর রহমান বলেন, মৃত্যুর পরপরই জমি ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ছেলে লাশ আটকে রাখে। পরে দু’পক্ষকে নিয়ে বসে মীমাংসা করা হয়। দুপুরের পর কবরস্থানে কবর খুড়ার অনুমতি দেয় মহসিন আলী। এরপরে বিকাল ৪টায় জানাযা নামাজ শেষে তার বাবার দাফন করা হয়। 
 
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুরুল হুদা বলেন, এটি সম্পূর্ণ পারিবারিক সমস্যা। গতরাতে ছেলে একটি অভিযোগ দিয়েছিল। আজ তারা কোনো অভিযোগ না থাকায় এবং মৃত্যুর বিষয়ে সন্দেহ দূর হওয়ায় ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দাফন হয়ে গেছে। 
 
এ বিষয় নিয়ে চার মেয়ের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তারা সকলেই শোকাহত। তাই কথা বলতে কেউ রাজি হয়নি। 

মন্তব্য করুন


Link copied