আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ২৬ আগস্ট ২০২৫ ● ১১ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ২৬ আগস্ট ২০২৫
রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় অবকাঠামোসহ এসিগুলো নষ্ট

রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় অবকাঠামোসহ এসিগুলো নষ্ট

উগ্রবাদ নিয়ে সতর্ক বিএনপি

উগ্রবাদ নিয়ে সতর্ক বিএনপি

তদন্ত হবে আড়ি পাতার

রাজনৈতিক সরকার এ ব্যবস্থা ধরে রাখতে চায়
তদন্ত হবে আড়ি পাতার

হাইকোর্টের বিচারপতি হলেন সারজিস আলমের শ্বশুর

হাইকোর্টের বিচারপতি হলেন সারজিস আলমের শ্বশুর

ঈদের বিশেষ খাবার: কারা খাবেন, কারা নয়, জানালেন পুষ্টিবিদ

শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫, রাত ১০:০০

Advertisement Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  পবিত্র ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদে আমাদের এমন কিছু খাবার খাওয়া হয়, যা বছরের অন্য সময় সাধারণত কম খাওয়া হয়। গরু ও খাসির কলিজা, পায়া, ভুঁড়ি, মগজ এবং ঝুরা মাংস এর মধ্যে অন্যতম। এই খাবারগুলো স্বাস্থ্যের জন্য কিছুটা উপকারী হলেও অতিরিক্ত বা অনিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খাওয়া হলে তা ক্ষতিকর হতে পারে।

কুরবানির বিশেষ এসব খাবারগুলো কীভাবে এবং কতটুকু পরিমাণ খাওয়া উচিত, তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে এ ব্যাপারে উত্তর বাংলা ডটকমের  সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানী ঢাকার লাইফ কেয়ার মেডিকেল সেন্টার অ্যান্ড বিডিএন পল্লবী ডায়াবেটিস সেন্টারের পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান ডরিন। তাহলে পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী ঈদের বিশেষ খাবার সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

গরুর কলিজা:
গরুর কলিজা আয়রনের সমৃদ্ধ উৎস, যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক। এছাড়াও এতে ভিটামিন বি১২ ও রিবোফ্লাভিন রয়েছে, যা স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতায় ভূমিকা রাখে। তবে কলিজায় কোলেস্টেরলের মাত্রা উচ্চ হওয়ায় হৃদরোগ, ফ্যাটি লিভার, উচ্চ কোলেস্টেরল, গাউট বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এটি এড়িয়ে চলা উচিত বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত। স্কুলগামী শিশু, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্য কলিজা উপকারী হতে পারে, তবে মাসে দুবারের বেশি না খাওয়াই ভালো।

পায়া:
অনেকে মনে করেন গরু বা খাসির পায়ায় প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে। আসলে পায়ার প্রধান উপাদান ফ্যাট। ফ্যাটি লিভার, উচ্চ কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পায়া খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। সুস্থ ব্যক্তিরা মাসে এক বা দুইবার পায়া উপভোগ করতে পারেন।

মগজ:
গরুর মগজ প্রোটিন, ভিটামিন বি১২ ও বি৬-এর ভালো উৎস। এছাড়াও এতে আয়রন, পটাশিয়াম এবং কিছু ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। তবে মগজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি থাকায় হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা উচ্চ কোলেস্টেরলে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এটি এড়িয়ে চলা উচিত। সুস্থ ব্যক্তিরা প্রতি দুই মাসে ২০ থেকে ২৫ গ্রাম মগজ খেতে পারেন।

ভুঁড়ি:
গরুর ভুঁড়ি প্রোটিন, ফ্যাট, কোলেস্টেরল এবং পটাশিয়ামের উৎস। এতে থাকা কোলাজেন ত্বকের জন্য উপকারী। তবে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি হওয়ায় পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত। রান্নার সময় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার এড়ানো উচিত। ইউরিক অ্যাসিড বা কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ভুঁড়ি খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

 

ঝুরা মাংস:
ঝুরা মাংস সাধারণত রান্না করা মাংস দীর্ঘ সময় ধরে জ্বালিয়ে প্রস্তুত করা হয়। এর পুষ্টিগুণ সাধারণ মাংসের মতোই, তবে বারবার গরম করলে ট্রান্সফ্যাট তৈরি হতে পারে, যা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বাড়ায়। সুস্থ ব্যক্তিরা পরিমিত পরিমাণে ঝুরা মাংস খেতে পারেন, তবে বারবার গরম করা এড়ানো উচিত।

পরামর্শ:
পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ: এই বিশেষ খাবারগুলো পরিমিত পরিমাণে এবং নিয়মিত বিরতিতে খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

রান্নার পদ্ধতি: রান্নার সময় অতিরিক্ত তেল বা মসলা ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। কম তেলে সেদ্ধ বা গ্রিল করে রান্না করা স্বাস্থ্যসম্মত।

স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিবেচনা: যদি আপনার কোনো দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ, তবে এই খাবারগুলো খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বৈচিত্র্যময় খাদ্যাভ্যাস: শুধু মাংসজাতীয় খাবারের ওপর নির্ভর না করে শাকসবজি, ফলমূল এবং শস্যজাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।

সর্বোপরি, কুরবানির ঈদের আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক জ্ঞান ও পরিমিতির মাধ্যমে আমরা সুস্থ থেকে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে পারি।

মন্তব্য করুন


Link copied