বেরোবি প্রতিনিধি: তিস্তা নদীর সুষ্ঠু ও ন্যায্য পানিবণ্টনের দাবি সামনে আনতে প্রথমবারের মতো তিস্তা নদীর পাড়ে জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে বেগম রোকেয়া ইউনিভার্সিটি ডিবেট ফোরাম (বিআরইউডিএফ)। নদী ও পরিবেশ রক্ষায় তরুণদের যুক্তিনির্ভর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই গ্রহণ করা হয়েছে এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
আগামী ১২ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কর্মশালা ও প্রাথমিক পর্ব দিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হবে। পরদিন ১৩ ডিসেম্বর তিস্তা নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হবে গ্র্যান্ড ফাইনাল—যার মাধ্যমে শেষ হবে ‘বাঁচায় তিস্তা, বাঁচাও তিস্তা—বিআরইউডিএফ IV 3.0 জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৫’-এর আয়োজন।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ৩২টি দল এতে অংশ নেবে। আয়োজকদের দাবি, তিস্তার ন্যায্য পানিবণ্টন, পরিবেশ সুরক্ষা এবং রাষ্ট্রীয় আলোচনায় তরুণদের যুক্তিভিত্তিক অবস্থানকে সামনে আনাই তাদের মূল লক্ষ্য।
গ্র্যান্ড ফাইনালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী। এছাড়া তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলনের প্রবক্তা, গবেষক ও পরিবেশ আন্দোলনকর্মী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
আয়োজক কমিটির সদস্যরা বলেন, নদী কেবল ভূগোল নয়; এটি জীবন, অর্থনীতি ও পরিবেশের ভিত্তি। নদীর প্রশ্নে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মৌলিক মানবিক দায়িত্ব। তরুণদের যুক্তি এই সত্যকে আরও জোরালো করবে—কারণ নদী মানেই জনগণের প্রাণধারা, আর জনস্বার্থ কখনো নীরব থাকতে পারে না। এই আয়োজন তিস্তা ইস্যুতে তরুণদের গবেষণাধর্মী বিশ্লেষণ ও জনস্বার্থভিত্তিক মতকে জাতীয় আলোচনায় নতুন মাত্রা দেবে।
সংগঠনটির সভাপতি রিশাদ নূর বলেন, তিস্তা পাড়ের মানুষের দুর্ভোগ যতটা আমরা শুনি, বাস্তবে তার চেয়েও বহু গুণ বেশি। বন্যার সময়ের খবর হয়তো আসে, কিন্তু ভারতের হঠাৎ পানি ছেড়ে দেওয়া, নদীভাঙন, ফসলহানি, দীর্ঘ খরা, দারিদ্র্য—এইসব সমস্যা থেকে যায় আড়ালে। অথচ আমরা, দেশের মানুষ, এ বিষয়ে তেমন আলাপই করি না। আমাদের আয়োজন ‘বাঁচায় তিস্তা, বাঁচাও তিস্তা’—এই ইস্যুতে জাতীয় আলোচনার সুযোগ তৈরি করতে। যেন সবাই দেখুক, বুঝুক এখানকার মানুষের বাস্তব অবস্থা। যুক্তির মঞ্চে তিস্তা পাড়ের মানুষ তার ন্যায্য অধিকার ফিরে পাক—আমাদের প্রত্যাশা এটাই।