আর্কাইভ  সোমবার ● ৭ জুলাই ২০২৫ ● ২৩ আষাঢ় ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ৭ জুলাই ২০২৫
এখনও শহীদ মীর মুগ্ধকে অজান্তে খুঁজে ফেরে তার পরিবার

ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব
এখনও শহীদ মীর মুগ্ধকে অজান্তে খুঁজে ফেরে তার পরিবার

রংপুরের  প্রিয় সহ জুলাই আন্দোলনে নিহত ৬ সাংবাদিক: কেমন আছে তাদের পরিবার

ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব
রংপুরের প্রিয় সহ জুলাই আন্দোলনে নিহত ৬ সাংবাদিক: কেমন আছে তাদের পরিবার

রংপুরে তিনজন সহ গেজেটে নাম নেই ২৩ জুলাই শহীদের, অন্তর্ভুক্তির অপেক্ষায় পরিবার

ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব
রংপুরে তিনজন সহ গেজেটে নাম নেই ২৩ জুলাই শহীদের, অন্তর্ভুক্তির অপেক্ষায় পরিবার

মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ দিবস পালনের আহ্বান

ফিরে দেখা জুলাই বিপ্লব
মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ দিবস পালনের আহ্বান

শীতে ব্যথাবেদনায় করণীয়

রবিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২২, সকাল ০৯:০১

ডা. এম ইয়াছিন আলী

গরমকালে মানুষ বাতব্যথায় খুব কমই কাবু হয়। কিন্তু শীতকালে মানুষ খুব কাহিল হয়ে পড়ে। আমাদের দেশে এখন শীত। তীব্রতা যত বাড়ছে, আক্রান্ত রোগী ব্যথায় তত বেশি কষ্ট পাচ্ছে। শীতে ব্যথাবেদনা থেকে দূরে থাকা সম্ভব। যেমন

ঘাড়ব্যথার ক্ষেত্রে : এ রোগের চিকিৎসার উদ্দেশ্য হলো ব্যথা কমানোর পাশাপাশি ঘাড়ের নড়াচড়ার ক্ষমতা ফিরিয়ে আনা, ঘাড়ের মাংসপেশির শক্তি বাড়ানো, ঘাড় বা স্পাইনের সঠিক অবস্থা সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া এবং যেসব কারণে আবার ঘাড়ব্যথা হতে পারে, সেই সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি ও সেইভাবে চলার চেষ্টা করা। ব্যথা কমাতে ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা কার্যকরী। বিশেষ করে পদ্ধতিগত ব্যায়াম, যেমন হাত দিয়ে মাথার চারপাশ চাপ দিয়ে ঘাড়ের মাংসপেশি শক্ত করে দুকাঁধ এক করে উপরের দিকে তোলা, মাঝারি আকারের বালিশ ব্যবহার ইত্যাদি। ফিজিওথেরাপিতে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে চিকিৎসা, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ, মেনিপুলেশন এবং প্রয়োজনমতো ট্রাকশনে রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে। ঘাড় অপ্রয়োজনীয় নড়াচড়া থেকে বিরত রাখা এবং সাপোর্ট দিতে সারভাইক্যাল কলার ব্যবহার, মাথার নিচে মাঝারি আকারের বালিশ ব্যবহার করলে রোগমুক্তি সম্ভব।

কোমরব্যথার ক্ষেত্রে : এ রোগের কারণ, প্রক্রিয়া ও চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রায় ঘাড়ব্যথা বা সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিসের মতোই। তবে সঠিকভাবে রোগীর শারীরিক অবস্থান রক্ষায় গুরুত্ব দিলে অনেক ক্ষেত্রে কোমরব্যথা এড়ানো সম্ভব। শক্ত বিছানায় শোয়া, কাত হয়ে বিছানায় শুতে যাওয়া এবং ওঠা, ভারি জিনিস বহন বা না তোলা, নিয়মিত কোমরের ব্যায়াম করা এবং অসমতল জায়গায় চলাচল না করলে এ ব্যথা থেকে দূরে থাকা সম্ভব। ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি ও থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ করলে রোগীর পক্ষে ব্যথামুক্ত জীবনযাপন করা সম্ভব।

শোল্ডার জয়েন্ট ব্যথার ক্ষেত্রে : এ রোগের চিকিৎসায় ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি, আলট্রাসাউন্ড থেরাপি, আইএফটি ব্যবহার করে ব্যথা কমানো যায়। ইলেকট্রোথেরাপির সঙ্গে জয়েন্টের সচলতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের থেরাপিউটিক ব্যায়াম, যেমন মোবিলাইজেশন ও মেইনপুলেশন এক্সারসাইজ এবং বিভিন্ন রকম কৌশলগত ব্যায়াম করানো হয়। এ ছাড়া সোল্ডার ব্যথার রোগীদের নিয়মিত সাঁতার কাটা এবং ব্যবহারিক ব্যায়াম, যেমন দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে হাত আস্তে করে উপরে তোলা, তোয়ালে দিয়ে পিঠ মোছা ইত্যাদি। যে স্থানে ব্যথা সেদিকে কাত হয়ে না শোয়া এবং স্থানটিতে গরম শেক দেওয়া ইত্যাদি উপদেশ মেনে চললে উপকার পাওয়া যায়। অনেক সময় শোল্ডার জয়েন্টে ইনজেকশন প্রয়োগ করারও প্রয়োজন হতে পারে।

হাঁটুব্যথার ক্ষেত্রে : এ রোগের উৎকৃষ্ট চিকিৎসা হচ্ছে ফিজিওথেরাপি। কোনোভাবেই এমন কাজ বা ব্যয়াম করা ঠিক হবে না, যাতে ব্যথা বাড়ে। এ ক্ষেত্রে আরও পরামর্শ হচ্ছে হাঁটু অতিরিক্ত ভাঁজ না করা, শরীরের ওজন স্বাভাবিক রাখা বা বাড়তি ওজন কমানো। নামাজ পড়ার সময় চেয়ার ও বাথরুম ব্যবহারে কমোড ব্যবহার বাঞ্ছনীয়।

পরামর্শ: ব্যথা বেশি হলে ৭ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিন। নিয়মিত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নেবেন। ব্যথাস্থানে ১০-১৫ মিনিট গরম বা ঠান্ডা শেক দেবেন। বিছানায় শোয়া-ওঠার সময় যে কোনো একদিকে কাত হয়ে হাতের ওপর ভর দিয়ে শোবেন বা উঠবেন। ঘাড় নিচু করে কোনো কাজ করবেন না। পিঁড়ি, মোড়া বা ফ্লোরে না বসে চেয়ারে পিঠ সাপোর্ট দিয়ে মেরুদন্ড সোজা করে বসবেন। ফ্লোরে বিছানায় না শুয়ে শক্ত ও সমান বিছানায় শোবেন। মাথা বা হাতে ভারী বোঝা বহন নিষেধ। দাঁড়িয়ে বা চেয়ারে বসে রান্না করবেন। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের নির্দেশমতো দেখানো ব্যায়াম নিয়মিত করবেন, ব্যথা বেড়ে গেলে ব্যায়াম বন্ধ রাখবেন। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, পেট ভরে খাবেন না, অল্প অল্প করে বারবার খাবেন। সিঁড়িতে ওঠার সময় হাতল ধরে উঠবেন। চেয়ারে বসে গোসল করবেন। কোনো ধরনের মালিশ করবেন না। দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না, দ্রুত অবস্থান বদলাবেন। শোবার সময় একটি মাঝারি আকারের বালিশ ব্যবহার করবেন। বাইরে চলাফেরা করার সময় কোমরের বেল্ট ব্যবহার করবেন, শোবার সময় ও ব্যায়াম করার সময় বেল্ট খুলে রাখবেন। হাই হিলযুক্ত জুতা ব্যবহার করবেন না, নরম জুতা ব্যবহার করবেন। ব্যথা তীব্র হলে কমোডে মলত্যাগ করবেন। চলাফেরায় ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন ও রাস্তা এড়িয়ে চলবেন ও সামনে বা মাঝামাঝি আসনে বসবেন। ব্যথা কমে গেলে নিয়মিত সমতল জায়গায় কমপক্ষে ১ ঘণ্টা হাঁটবেন।

লেখক : বাতব্যথা ও প্যারালাইসিস রোগে ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ; কনসালট্যান্ট ও বিভাগীয় প্রধান, ফিজিওথেরাপি বিভাগ, প্রো-অ্যাকটিভ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।

চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা। ০১৭৮৭১০৬৭০২

মন্তব্য করুন


Link copied