স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ আর্জেন্টিনার ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয়। কাতার ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়ে সারা দেশের মতো নীলফামারীতেও বিজয় উল্লাস করেছেন আর্জেন্টিনার হাজার হাজার সমর্থক। রাত থেকে পাড়ায় পাড়ায় গ্রাম-গঞ্জে আতশবাজি, নাচ,গান,মিছিল। প্রিয় দল আর্জেন্টিনা ও প্রিয় খেলোয়ার লিওনেল মেসি কাপ জেতায় থেমে রাখতে পারেনি চোখের জল। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনাল খেলা দেখা শেষে অবশেষে বিজয়ের আনন্দে মেতে ওঠে নগরীর আর্জেন্টিনা সমর্থকরা।
সোমবার(১৯ ডিসেম্বর) বিকালে আর্জেন্টিনা ফ্যান কাব নীলফামারীর পক্ষে বিশাল আনন্দ র্যালি বের করা হয়। শহরের হাইস্কুল মাঠ থেকে বিশাল আনন্দ র্যালি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। ব্যান্ড পার্টি, বাঁশি বাজিয়ে ও গায়ে আর্জেন্টিনার জার্সি পরে সবাই র্যালিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সর্মথকরা। সবার কণ্ঠে ছিল আর্জেন্টিনা আর বিশ্বসেরা ফুটবলার মেসিকে ঘিরে স্লোগান।
এদিকে রবিবার(১৮ ডিসেম্বর) রাতে খেলা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই হাজার হাজার ফুটবল প্রেমীর উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় নীলফামারী পৌর সুপার মার্কেট ও শাহীপাড়া মোড়।
খেলা উপভোগ করে বিজয়ের আনন্দে মেতে ওঠেন মেসি সমর্থকরা। এ সময় উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।
মাহফুজ রহমান নামে এক আর্জেন্টাইন সমর্থক বলেন, মেসি তার শেষ বিশ্বকাপটি জয় করবেন, এমনটাই প্রত্যাশা করেছিলেন তিনি। অবশেষে সেটি সত্যি হলো। বিশ্বকাপ নিল আর্জেন্টিনা।
আরেক সমর্থক মীর উল্লাস বলেন, চ্যাম্পিয়ন দলটি তাদের বিজয়ের ধারাবাহিকতা যেন ধরে রাখে, এমনটাই প্রত্যাশা তার।
আর্জেন্টিনা সমর্থক রিফা তাসনিম বলেন, প্রিয় দল আর্জেন্টিনা ৩৬ বছর পর স্বপ্ন পূরণ করেছে। ছন্দময় ফ্রান্সের বিপে যদিও এটি একটি কঠিন ম্যাচ ছিল। মেসির হাতে ট্রফি দেখার সেই মাহেন্দ্রণ বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এর চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না।
আর্জেন্টিনা সমর্থক মর্তুজা রহমান সুজন বলেন, কাতারের দোহায় লুসাইল স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলায় মেসির অপোর অবসান ঘটার সঙ্গে আর্জেন্টিনারও বিশ্বকাপের জন্য ৩৬ বছরের অপোর পালা শেষ হয়। ফ্রান্সকে পেনাল্টি শুটআউটে হারিয়ে আর্জেন্টিনা শিরোপা জিতলো। এই জয় মেসির, এই জয় আর্জেন্টিনার, এই জয় আমাদের। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনা আবাও কাপ জিতবে বলে আশা করছি।
আর্জেন্টিনা সমর্থক নিলয় ইসলাম বলেন, ফ্রান্স গতবারের চ্যাম্পিয়ন দল। ফাইনাল খেলাটি আসলেও রমাঞ্চক ছিল। প্রথমার্ধ্বে লিওনেল মেসি ও ডি মারিয়া গোল করায় দলটি জয়ের দিকে এগিয়ে গিয়েছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধ্বে ঝড় তোলেন ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপে। একমিনিটের মাথায় পর পর দুইটি গোল করে আর্জেন্টিনাকে চাপের মধ্যে রাখে এমবাপে। খেলা শেষের পরবর্তী অতিরিক্ত মিনিটে মেসি ও এমবাপে আরো এক এক গোলে শেষ পর্যন্ত খেলা গড়ালো পেনাল্টি শুটআউটে। আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ বলেছিলো মেসির জন্য জীবন দিতে পারবেন। মেসিকে বিশ্বকাপ উপহার দিবেন। পেনাল্টি শুটআউটে দুইটি গোল থামিয়ে মেসিকে বিশ্বকাপ উপহার দিল সে।
আর্জেন্টিনার সমর্থক মাসুদ পারভেজ প্রিন্স ও তানভির হাফিজ বলেন, মেসির নেতৃত্বে আর্জেন্টিনা টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত ছিল। আশা করি, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মদের অনুপ্রেরণা দেওয়া হলে একদিন তাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশও বিশ্বকাপ খেলবে।
আর্জেন্টিনা ফ্যান কাব নীলফামারীর এডমিন নাজমুস সাকিব জুন বলেন, লিওনেল মেসি হচ্ছেন মাঠের সবচেয়ে ঠান্ডা মাথার মানুষ। বিশ্বকাপ ইতিহাসের একমাত্র ফুটবলার হিসেবে মেসি গ্রুপ পর্বে, দ্বিতীয় রাউন্ডে, কোয়ার্টার ফাইনালে, সেমিফাইনালে এবং ফাইনালে গোল করার রেকর্ড গড়েছেন। মেসির সাথে জুটি গড়েছে ম্যাক অ্যালিস্টেয়ার ও দি মারিয়া।