আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ২২ অক্টোবর ২০২৪ ● ৭ কার্তিক ১৪৩১
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ২২ অক্টোবর ২০২৪
 
 width=
 
 
 width=
 
শিরোনাম: উত্তরবঙ্গে ঘনিয়ে আসছে শীত; তাপমাত্রা ১৭.৮       আড়াই শতাধিক এসআইকে অব্যাহতি       প্রবাসী সরকার: কী বলছে আ.লীগ ও ভারত       রংপুরে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল        ব্যারিস্টার সুমন আটক      

 width=
 

নীলফামারীতে শুরু হয়েছে কম খরচে ‘রাইস ট্রান্সপ্লান্টার’ মেশিনে বোরো ধানের চারা রোপণ

রবিবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৩, বিকাল ০৭:১৬

স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারীতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের যন্ত্রের মাধ্যমে বোরো ধানের চারা রোপণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চলতি রবি মৌসুমে সরকারের কৃষি প্রণোদনা কর্মসুচির আওতায় আজ রবিবার(২২ জানুয়ারী) নীলফামারী সদর উপজেলার তরুনীবাড়ি ব্লকে ৫৮ জন কৃষকের ২১০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের সমালয়ে চাষাবাদ পদ্ধতির ট্রে-তে বীজতলা তৈরির পর রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপন কার্যক্রম শুরু হয়। ফলে কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহারে কৃষকরা লাভজনক হবে। এই জেলার ডিমলা ও কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় সরকারের কৃষি প্রণোদনা ১৪ লাখ টাকায় এই কর্মসুচির আওতায় ১০০ বিঘা জমিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে একই ভাবে বোরোর চারা রোপন করা শুরু করা হয়। 
বিকাল ৪টায় তরণীবাড়ি ব্লক এলাকায় উদ্বোধন করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. এস,এম আবু বক্কর সিদ্দিক। উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসর রফিকুল ইসলাম, জেলা কৃষি প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার কর, তরণীবাড়ি ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার প্রার্থপ্রতিম রায়, দুবাছুড়ি ব্লক অফিসার রাকিব আবেদীন। সভাপতিত্ব সদর উপজেলা কৃষি অফিসার আতিক আহমেদ। 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্মার্ট বাংলাদেশে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদেরকেও কৃষিতে এগিয়ে যেতে হবে। রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে খুব দ্রুত অল্প সময়ে ধানের চারা রোপন করা সম্ভব। তাছাড়াও খরচ অনেক কম এবং লোকবল খুব কম প্রয়োজন। আর এই পদ্ধতিতে ধান রোপন করলে ধানের ফলনও অনেক ভালো হয়। এই ছোট যন্ত্র দিয়ে একসাথে ৪ লাইনে ধানের চারা রোপণ করা যায়। যন্ত্রটি একসাথে ৪টি ট্রে বহন করে চালাতে পারে। সনাতন পদ্ধতিতে এক বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে কমপে চারজন শ্রমিককে কাজ করতে হয়। এতে করে কৃষকদের অধিক মুজুরি গুণতে হয়। এটি যন্ত্র দিয়ে ৪০ মিনিটে ২টি যন্ত্র দিয়ে ২০ মিনিটে এক বিঘা  জমির ধান রোপণ করা যাচ্ছে। এটি যন্ত্রে জ্বালানি খরচ মাত্র ৫০ টাকা। এ যন্ত্র দিয়ে ধানের চারা রোপণ করলে কৃষকের সময় ও অর্থের সাশ্রয় হবে। এছাড়া রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে চারা রোপণ করলে লাইন সোজা হয়। ফলে পরবর্তীতে আগাছা নিংড়ানো, সার ও কীটনাশক ছিটানো ও ধান কাটা সহজ হয়। প্রশিক্ষনের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকদের দিয়েই “রাইস ট্রান্সপ্লান্টার” যন্ত্রটি পরিচালনা করা হচ্ছে। যা সরকারি ভাবে আপাতত বিনা খরচে সহায়তা দেয়া হয়েছে। 
তরণীবাড়ি ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার প্রার্থপ্রতিম রায় বলেন, যন্ত্রটি ব্যবহার করতে জ্বালানি খরচও খুব কম, ঘন্টায় মাত্র আধা লিটার পেট্রল প্রয়োজন পড়ে। এছাড়াও নিখুঁতভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণে চারা রোপণ করার সুবিধা রয়েছে। যন্ত্রটি ব্যবহার করলে বীজতলার জন্যও আলাদা জমির প্রয়োজন হয় না। বাড়ির উঠানেই বীজতলা তৈরি করা সম্ভব। বৃষ্টির মধ্যেও খুব সহজে চারা রোপণ করা যায়। অত্যন্ত কম খরচ, শ্রম ও অল্প সময়ে অধিক জমিতে চারা লাগানো সম্ভব হওয়ায় যন্ত্রটির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে কৃষকরা। 
সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ আতিক আহমেদ বলেন, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন ব্যবহারের ফলে বীজ, শ্রম ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন ব্যয়ও কমবে। বাড়বে ধানের ফলন। সনাতন পদ্ধতিতে এক বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে শ্রমিক দিয়ে খরচ হয় ১৫শ থেকে ১৮শ টাকা। এতে করে কৃষকদের অধিক মজুরি গুনতে হয়। এেেত রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্র ব্যবহার করে এক বিঘা জমিতে ধান রোপন করতে মাত্র ৭শ থেকে ১ হাজার টাকা খরচ হয়। চারা নষ্ট হওয়ার কোনো আশঙ্কাও থাকে না। এর মাধ্যমে স¤পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বিভিন্ন দূরত্বে ও গভীরতায় চারা রোপণ করা যায়। 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. এস,এম আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এই পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণ করতে গেলে প্রথমে ট্রে পদ্ধতিতে চারা তৈরি করতে হবে। ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে চারা তৈরি হয়ে যায়। পরে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ করতে হয়। কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে সরকার ৫০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিচ্ছে। রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে চারা রোপণ ও কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কর্তন পর্যন্ত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। 

মন্তব্য করুন


 

Link copied