ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় এক স্কুল ছাত্রীকে (১৫) বিয়ের কথা ডেকে নিয়ে দলবদ্ধ গণধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামী হাসান আলীকে (২৫) ২০ দিনের মাথায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবাৃর (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় জেলার আটোয়ারী উপজেলা বাজার থেকে একটি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
একই দিন দিনগত রাতে আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা প্রধান আসামী হাসানকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি প্রতারক প্রেমিক হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিঙ্গাসাবাদ চলছে। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) তাকে আদালতে হাজির করা হবে। এ নিয়ে এই মামলার এজাহারভুক্ত ৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হলো।
গত ৬ আগস্ট (শনিবার) রাতে জেলার আটোয়ারী উপজেলার পুরাতন আটোয়ারী এলাকার বন্দরপাড়া গ্রামে ওই কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ৭ আগস্ট (রোববার) সকালে আটোয়ারী থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাত রেখে মামলা দায়ের করে ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার।
ধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রীর বাড়ি জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায়। ভুক্তভোগী ছাত্রী পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার পর নিজ বাড়ি তেঁতুলিয়ায় অবস্থান করছেন।
এর আগে ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ঘটনার পরদিন ৭ আগস্ট (রোববার) আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের মালগোবা এলাকার রাজু (১৯) ও সাইফুল ইসলাম (৪৮) নামে দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতে তোলা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠায়।
ধর্ষণের অভিযুক্তরা হলেন, আটোয়ারী উপজেলার পুরাতন আটোয়ারী মালগোবা গ্রামের মৃত আমিনার রহমানের ছেলে মো. হাসান (২৫) (মূলহোতা), একই এলাকার ফতেহপুর গ্রামের খামির উদ্দিনের ছেলে মো. সবুজ (৩০), আব্দুর রহমান (৫০), তার ছেলে আমিনুল ইসলাম ডিপজল (২৫), খাজিম উদ্দিনের ছেলে মো. নজরুল (৪০) ও কৈলাসের ছেলে ওমর (৩০)।
জানা গেছে, এক বছর আগে মালগোবা গ্রামের হাসানের সঙ্গে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক হয় ওই কিশোরীর। ৬ আগস্ট (শনিবার) সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে স্কুলে যায় সে (কিশোরী)। দুপুরে মোবাইলে কল দিয়ে দেখা করার কথা বলে তাকে পঞ্চগড়ে ডেকে নেয় হাসান। বিকেলে পঞ্চগড় পৌঁছালে কাজি অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাতে আটোয়ারী উপজেলার বন্দরপাড়া গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় কিশোরীকে। সেখানে হাসান ও তার বন্ধু সবুজ ধর্ষণ করেন তাকে। এ সময় ওই এলাকার আব্দুর রহমান, তার ছেলে আমিনুল ইসলাম, তাদের প্রতিবেশী নজরুল ও ওমর সেখানে উপস্থিত হলে হাসান ও সবুজ পালিয়ে যায়। এ সুযোগে তারাও ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ শেষে তাকে ফেলে সবাই পালিয়ে যায়। গভীর রাতে মান্নান নামে এক পথচারী কিশোরীকে উদ্ধার করে বন্দরপাড়া গ্রামের নায়েব আলীর বাড়িতে নিয়ে যান। পরে নায়েব আলী তার পরিবারের সদস্যদের খবর দিলে তারা আসেন এবং রোববার ভোরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই ছাত্রীকে।