আর্কাইভ  শুক্রবার ● ৯ মে ২০২৫ ● ২৬ বৈশাখ ১৪৩২
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ৯ মে ২০২৫
ভারতশাসিত কাশ্মীরে ব্ল্যাকআউট, জম্মু বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ

ভারতশাসিত কাশ্মীরে ব্ল্যাকআউট, জম্মু বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ

ইসরাইলের তৈরি ড্রোন দিয়ে হামলা চালাচ্ছে ভারত

ইসরাইলের তৈরি ড্রোন দিয়ে হামলা চালাচ্ছে ভারত

পাকিস্তানে ভারতের হামলার নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’ কেন?

পাকিস্তানে ভারতের হামলার নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’ কেন?

সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অমিত শাহ’র জরুরি বৈঠক

সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অমিত শাহ’র জরুরি বৈঠক

রওশন এরশাদকে নিয়ে যা হচ্ছে

বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, সকাল ০৯:২৪

Advertisement

ডেস্ক: রওশন এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরাতে জিএম কাদেরের পক্ষ হয়ে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছিলেন সংসদের বিরোধী দলের প্রধান হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা। এরপর তিনি নিজেই দলে পদচ্যুত হলে গতকাল সেই চিঠি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। স্পিকারের সঙ্গে সংসদ সচিবালয়ে দেখা করে আগের আবেদন প্রত্যাহারের আবেদন করেন রাঙ্গা। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিরোদলীয় নেতা রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ। এর আগে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুও আরেকটি চিঠি দিয়েছেন স্পিকারের কাছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের আবেদনের আইনগত বিষয় বিশ্লেষণ করছেন বলে জানান। 

তিনি বলেন, যেদিন আমাদের অধিবেশন শেষ হয় সেদিন একটা চিঠি আমার কাছে আসে। সেটার সঙ্গে ছিল তাদের দলীয় সভা ডাকার একটি নোটিশ। পাশাপাশি তাদের সংসদ সদস্যদের সই করা একটা কাগজ। আমি এসব দেখছি। এরপরে আরও অনেক কাগজ এসেছে।

মুজিবুল হক চুন্নু দিয়েছেন, মসিউর রহমান রাঙ্গা দিয়েছেন। পর্বে পর্বে তারা আরও কাগজ নিয়ে আসছেন। অনেকগুলো চিঠি একত্রিত হয়েছে। এসব চিঠি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে। বিশেষ করে লিগ্যাল দিকটা। স্পিকার বলেন, কে বিরোধী দলের নেতা হবেন না হবেন সেটা আমার বিষয় না। সেটা জাতীয় পার্টি কীভাবে করতে চায় সেটা তাদের বিষয়। কিন্তু প্রসেসটা যাতে লিগ্যালি এবং যথাযথ প্রক্রিয়ায় হয় সেটা পরীক্ষা-নীরিক্ষা করছি। এসবের জন্য কিছু সময় লাগবে। এরপরই আমার সিদ্ধান্ত দেবো। 
এদিকে স্পিকারের কক্ষ থেকে বেরিয়ে মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, সংসদীয় দলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমি যে চিঠি দিয়েছিলাম, সেটা আমি প্রত্যাহার করতে চাই বলে স্পিকার মহোদয়কে জানিয়েছি। প্রক্রিয়াটা যে ঠিক হয়নি, সেটা আমি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম। যেহেতু প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি, সেহেতু আমি আমার সই করা চিঠিটা প্রত্যাহার করার জন্য বলেছি।

স্পিকার কী বলেছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্পিকারকে বলেছি, এজেন্ডা ছাড়া মিটিং দিয়ে বিরোধী দলের নেতাকে বাদ দিয়ে উপনেতা যদি নেতা হয়ে যান, তবে এটা দুঃখজনক। বৈঠকের তো এজেন্ডা থাকতে হবে। স্পিকার বলেছেন, আমি চিঠি দিতেই পারি। উনি দেখবেন। আমি দলের গঠনতন্ত্র স্পিকারকে দিয়েছি। তিনি দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন।

মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, একই সময় জাতীয় পার্টির দুটি গঠনতন্ত্র। এক জায়গায় বলা আছে, প্রধান পৃষ্ঠপোষক সব কাজ করতে পারবেন। চেয়ারম্যান ও মহাসচিব তার সঙ্গে পরামর্শ করবেন। আর একটায় প্রধান পৃষ্ঠপোষকের কোনো খবরই নেই। 

গঠনতন্ত্র নকল করে আরেকটা করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে রাঙ্গা বলেন, একটা দলের যখন মিটিং হয়, তখন সভাপতিত্ব যে করেন তিনি চিঠি দেবেন। উনি (জি এম কাদের) সেটা না করে আমাকে দিয়ে করিয়েছেন। চিফ হুইপের এটা দেয়ার কথা না। আমি যে মিটিং করেছি সেটা ৩১শে অগাস্টের মিটিং। এমপিরা করেছেন ১লা সেপ্টেম্বর। এ তারিখের মিটিংয়ে আমার কাছ থেকে সই করিয়ে নেয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টির গৃহবিববাদে তাহলে কী এখন রওশনের সঙ্গে আছেন-এই প্রশ্নে মসিউর রহমান রাঙা বলেন, দলের সঙ্গে আছি। দল একটা। এখনও চাই উনারা বসে ঠিক করুন। দলে আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে। সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিতে এখন অভ্যন্তরীণ বিবাদ চলছে। 

দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন গত ৩০ আগাস্ট কাউন্সিল ডাকলে তার প্রতিক্রিয়ায় তাকে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরাতে উদ্যোগী হন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। পরদিনই দলটির সংসদীয় দলের বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়, রওশনকে সরিয়ে জি এম কাদের হবেন সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু গত ১লা সেপ্টেম্বর তাদের সিদ্ধান্ত জানান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে। পরে দলের প্রধান হুইপ রাঙ্গা আনুষ্ঠানিক চিঠি দেন স্পিকারকে। এরপর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রাঙ্গাকে ১৪ই সেপ্টেম্বর দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেন জি এম কাদের। পরে সংবাদ সম্মেলনে রাঙ্গা দাবি করেন, রওশনকে সরাতে যে চিঠি দেয়া হয়েছে, তার প্রক্রিয়া ‘সঠিক ছিল না’। 

জাতীয় পার্টির কর্তৃত্ব নিয়ে ভাবি রওশন এরশাদের সঙ্গে দেবর জি এম কাদেরের দ্বন্দ্ব অনেক দিনের। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দলের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নানা বৈঠকে দু’জন বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। নানা কৌশলে তাদের মানাতেন দলের প্রতিষ্ঠাতা ও তৎকালীন চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। এরশাদের মৃত্যুর পর জি এম কাদের দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিলে রওশন তাতে আপত্তি তোলেন। এরশাদের আসনে উপনির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে সেই দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়। এরপর জিএম কাদের বিরোধীদলীয় নেতার পদ পাওয়ার জন্য স্পিকারকে চিঠি দিলে বিভেদ আরও বাড়ে। একপর্যায়ে দলের একটি অংশ রওশনকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করলে জাতীয় পার্টি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। ওই সময় দুই পক্ষের নেতাদের সমঝোতা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, জি এম কাদেরই পার্টির চেয়ারম্যান থাকবেন। আর রওশন হবেন বিরোধীদলীয় নেতা।

মন্তব্য করুন


Link copied