আর্কাইভ  বুধবার ● ২৫ জুন ২০২৫ ● ১১ আষাঢ় ১৪৩২
আর্কাইভ   বুধবার ● ২৫ জুন ২০২৫
ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস না হওয়ার খবর আবারও নাকচ করলেন ট্রাম্প

ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস না হওয়ার খবর আবারও নাকচ করলেন ট্রাম্প

হত্যার গুজব উড়িয়ে জনসমাবেশে দেখা গেল ইরানের কুদস প্রধানকে

হত্যার গুজব উড়িয়ে জনসমাবেশে দেখা গেল ইরানের কুদস প্রধানকে

ইসরায়েল সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৭০০ জনকে গ্রেফতার করেছে ইরান

ইসরায়েল সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৭০০ জনকে গ্রেফতার করেছে ইরান

ইরানের হামলায় ধ্বংসযজ্ঞ, ক্ষতিপূরণের ৩৯ হাজার আবেদন ইসরায়েলে

ইরানের হামলায় ধ্বংসযজ্ঞ, ক্ষতিপূরণের ৩৯ হাজার আবেদন ইসরায়েলে

মনের যত্নে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে ধ্রুপদী সঙ্গীত

মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, দুপুর ০৪:৩৫

ছবি: এআই জেনারেটেড

নিউজ ডেস্ক:  ধ্রুপদী সঙ্গীত কি আমাদের জীবন বদলে দিতে পারে? এমন প্রশ্নের উত্তর মিলেছে লেখক ক্লেমেন্সি বার্টন-হিলের কাছে। তার অভিজ্ঞতা বলছে—হ্যাঁ, পারে। তার বই A Year of Wonder সে অভিজ্ঞতাই তুলে ধরেছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন কিছুক্ষণ সঙ্গীত শোনা আমাদের মানসিক শান্তি এবং জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিতে পারে।

এই সঙ্গীত মানুষের চিরন্তন সঙ্গী। চিরকাল মানুষ তা সৃষ্টি করেছে। আবার একে অপরের সঙ্গে ভাগাভাগিও করেছে। গানের প্রতি ভালোবাসা থেকে একসময় তরুণ-তরুণীরা মিক্সটেপ বানাতো। শীতপ্রধান দেশে কেউ কেউ আগুনের পাশে বসে গান গাইতো, শোনাতো প্রিয়তমাকে। এ উপমহাদেশেও গানের আসরের রেওয়াজ পুরনো। বরাবরই সঙ্গীত ছিল শেখার, বোঝার ও সংযোগ তৈরির মাধ্যম।

এখনও এই প্রবণতা আমাদের মধ্যে আছে। কিন্তু আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা বা নানা চাপে আমরা হারিয়ে ফেলেছি সচেতনভাবে গান শোনার সেই সহজ আনন্দ।

নিশ্চয়ই অনেকেই একমত যে, আজকাল মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। গবেষণা বলছে, নিয়মিত আত্মসেবার অভ্যাস আমাদের মনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তা থেকে অনেকে মেডিটেশন বা জিমে যাওয়া শুরু করেন। তবে শেষ পর্যন্ত তা চালিয়ে যেতে পারেন না।

লেখক ক্লেমেন্সি বার্টন-হিলও আত্মতৃপ্তির জন্য শরীরচর্চা শুরু করেছিলেন। তিনিও সেই অনেকের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন, মানে শেষ পর্যন্ত তা চালিয়ে যেতে পারেন নি। পরে তিনি দ্বারস্থ হন ধ্রুপদী সঙ্গীতের। যা তার জীবনে আনে আশ্চর্য পরিবর্তন। দিনে মাত্র কয়েক মিনিট গান শোনা— বিশেষ করে ক্ল্যাসিক্যাল সঙ্গীত— তাকে মানসিকভাবে অনেক স্থিতিশীল করেছে।

একসময় বার্টন-হিল একাধারে মা, ফ্রিল্যান্স কর্মী ও সমাজের চাপে মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে তাকে ‘সব কিছু ঠিক আছে’— এমন ভান করে চলতে হচ্ছিল। ভেতরে ভেতরে তিনি ভেঙেও পড়েছিলেন। অনেক চেষ্টা করেও কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছিলেন না।

অবশেষে সুরই তার জীবনে এনে দিলো শান্তি। হয়ে উঠল তার পরিত্রাতা। তার আত্মার যত্নের জন্যই প্রতিদিন একটি করে ধ্রুপদী গান শোনা অভ্যাসে পরিণত হলো। মেট্রোতে উঠেই সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল না করে, কানে হেডফোন দিয়ে গান শোনার অভ্যাস বদলে দিলো তার সকাল-পুরো দিন।

অনেকেই বার্টন-হিলের গল্প শুনে মনে করতে পারেন নিছকই গালগপ্প। কেউ কেউ দ্বিধাতেও পড়তে পারেন এই ভেবে যে, ক্ল্যাসিক্যাল সঙ্গীত তো উচ্চমার্গীয়। কেউ কেউ কিছুটা বোরিং-ও (বিরক্তিকর) মনে করতে পারেন। আদতে এই সঙ্গীত বাস্তবে হৃদয়ের তৃষ্ণা মেটাবে। স্পর্শ করবে আপনার আবেগ-অনুভূতি-অন্তরাত্মা। আপনাকে করবে ধীরস্থির।

কেউ যদি ভাবেন ধ্রুপদী সঙ্গীত বুঝতে হলে অনেক কিছু শিখতে হবে, তা একেবারেই ঠিক নয়। সঙ্গীতের একটাই শর্ত — কানে শোনার ক্ষমতা। আপনি চাইলে অফিস যাত্রায়, হাঁটতে হাঁটতে, রান্না করতে করতে কিংবা ঘুমানোর আগে শুনতে পারেন। এটি জীবনের সব কাজে সুন্দরভাবে মানিয়ে নিতে পারে।

মোদ্দা কথা, জীবনকে স্বস্তি দিতে আপনার কিছু অবলম্বন জরুরি। সেই তালিকায় অনায়াসে থাকতে পারে সুর-সঙ্গীত। আরও বিশেষভাবে বললে ধ্রুপদী সঙ্গীত। প্রতিদিন মাত্র কয়েক মিনিট। তা দিয়ে সকালটা শুরু করুন। হয়ত এটিই বদলে দিতে পারেন আপনার দিন।

(লেখা: বিবিসি’র ফিচার অবলম্বনে)

মন্তব্য করুন


Link copied