নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর দুই নগর ভবনের খাতা-কলমে ঢাকা এখন তিলোত্তমা নগরী। বাস্তবে দখল-দূষণে মৃতপ্রায়। উন্নয়নের নামে খানাখন্দে ভরপুর রাস্তাঘাট। খাল, খাসজমি দখল করে বড় বড় ভবন নির্মাণ। গত দেড় দশকে মেয়ররা ঢাকাকে ব্যবহার করেছেন পারিবারিক সম্পত্তির মতো। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ছিলেন অন্যতম। পারিবারিক প্রভাব খাটিয়ে তাপস ‘মেয়র’ থেকে হয়েছিলেন ‘ঢাকার জমিদার’। সিটি করপোরেশনে একটি গাড়ি বরাদ্দ হয়েছিল তাঁর খাবার আনা-নেওয়ার জন্য। ঢাকা শহরে তাপস যখন চলতেন, তাঁকে দেওয়া হতো ভিআইপি প্রটোকল। চারপাশের সব গাড়ি ও যানবাহন থামিয়ে দেওয়া হতো। এত বিপুল ক্ষমতাবান তাপস ঢাকা দক্ষিণ সিটিকে ব্যবহার করেছেন পারিবারিক সম্পত্তির মতো। এখানে তাপসের আত্মীয়স্বজনের অবাধ চাঁদাবাজি, ঠিকাদারি কাজের নামে লুটপাট, উন্নয়নকাজে কমিশন, নিয়োগ বাণিজ্যের মতো ঘটনা ছিল অনেকটা ওপেন সিক্রেট। নগর ভবনের কর্তা জনগণের ট্যাক্সের টাকা নিয়েও করেছেন নানান ছেলেখেলা। উদ্ভট উদ্ভট ধারণা নিয়ে সেগুলো পরীক্ষা করার জন্য বেছে নিতেন রাজধানীকে। এমন নানান বাহানায় বছর বছর শত শত কোটি টাকা গচ্চা গেলেও জবাবদিহি ছিল না। মশানিধন, যানজট নিরসন, ট্রাফিক আধুনিকায়ন, সৌন্দর্যবর্ধনে পরীক্ষামূলক প্রকল্প হাতে নিয়েও গচ্চা দিয়েছেন অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকা। তবে এসব প্রকল্প থেকে মেয়র এবং তাঁদের স্বজনরা হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। রাজধানী বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় ওপরের দিকে উঠলেও ভাগ্য বদলেছে দায়িত্ব পালন করা মেয়র এবং তাঁদের স্বজনদের।
২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে দায়িত্ব নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। এরপর সংস্থাটির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান ও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদারকে দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত করেন। নিজের আধিপত্য বিস্তারে অসংখ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত করেন তিনি। মেয়র থাকাকালে তাঁর স্বৈরাচারী শাসন, শোষণ, অপকর্ম ও দুর্নীতি নিয়ে টুঁশব্দটি করার সাহস পাননি কেউ। মন্ত্রীদের অনেককেও ধমক দিয়ে, তাচ্ছিল্য করে কথা বলতেন। সরকারি অন্য দপ্তরের প্রধানদের হুমকি দিতেন প্রায়ই।
সাবেক মেয়র যেসব উদ্যোগ নিয়েছিলেন, সেসব বন্ধ করে দেন তাপস। অনেক মার্কেটের উন্নয়নকাজ অসমাপ্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়। এতে সিটি করপোরেশনের কয়েক হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তাপসের হুকুম ছাড়া করপোরেশনের কোনো কাজই হতো না। দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ থেকে শুরু করে টেন্ডার, দোকান বরাদ্দ, উন্নয়ন প্রকল্প, উচ্ছেদ অভিযান যা-ই ঘটুক, সবকিছুতেই তাঁর অনুমতি লাগত। অনেক ফাইল প্রধান নির্বাহী পর্যন্ত গেলেই নিষ্পত্তি হওয়ার কথা; কিন্তু তিনি সেটা মানতেন না। শ্রমিক নিয়োগের তালিকায়ও তাঁর পছন্দের বাইরে কাউকে রাখতেন না। শেখ পরিবারের সদস্য হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার মতো সাহস দেখাতেন না কেউ। দক্ষিণ সিটিতে ছিল তাপসের জমিদারি।
আগের মেয়র দক্ষ-অদক্ষ লোক হিসেবে ১ হাজার ২৭০ জনকে চাকরি দিয়েছিলেন। মেয়র তাপস আসার পর ৯০০ জনকে চাকরিচ্যুত করেন। এখানে লেনদেনের বিনিময়ে নিজে ৪০০ লোকের চাকরি দিয়েছেন। নিজে সরাসরি কোনো টাকা লেনদেন না করলেও তাঁর মূল কাজ করে দিতেন সচিব আকরামুজ্জামান। ঠিকাদারি কাজের পার্সেন্টেজ লেনদেন হতো সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানের মাধ্যমে। আশিক দেশে কোনো লেনদেন করতেন না। সব সময় সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ায় বসে লেনদেন করতেন।
তাপস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই মধুমতী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে ডিএসসিসি। ব্যাংকটির অন্যতম মালিক তাপস। ডিএসসিসির আর্থিক ফান্ড, ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্সসহ সব ধরনের লেনদেন মধুমতী ব্যাংকে স্থানান্তর করা হয়। ডিএসসিসির স্থায়ী আমানত ৫০০ কোটি টাকা এফডিআর হিসেবে মধুমতী ব্যাংকে স্থানান্তর করা হয়। চার খাল সংস্কার প্রকল্পের ৮৭৬ কোটি, শাহবাগ শিশু পার্কের উন্নয়নকাজের ৬০৩ কোটিসহ কয়েকটি প্রকল্পের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকটিতে জমা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও তাপসের ঘনিষ্ঠজনেরা সংস্থার উন্নয়ন ও বিভিন্ন কেনাকাটার সিংহভাগ কাজ করেছেন। কারসাজি করে কোনোরকম প্রতিযোগিতা ছাড়াই ৫৪০ কোটি টাকার কাজ তাঁরা বাগিয়ে নিয়েছেন। পছন্দের লোক ও ক্ষেত্রবিশেষ অযোগ্য ব্যক্তিদের দিয়ে কাজ করানোর ফলে অনেক কাজ যথাসময়ে শেষ হয়নি।
জানা গেছে, কে কোন কাজ পাবেন, তা আগেই ঠিক করা হতো। সে অনুযায়ী দরপত্র প্রকাশ করার পর নির্দিষ্ট ব্যক্তিই কাজ পেতেন। এ প্রক্রিয়ায় ৩৭৫ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ বাস্তবায়ন করেছে ডিএসসিসি। এর বাইরে আরও ১৬৪ কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে। রাস্তাঘাট সংস্কার ও অবকাঠামো উন্নয়নের ১৭৪টি কাজে কোনো প্রতিযোগিতা হয়নি। প্রতিটি কাজের দরপত্রের বিপরীতে একটি করেই দরপত্র জমা হয়েছে। এভাবে ২০৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার কাজ হয়েছে।
ঠিকাদারি কাজ দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভাগ করে দিতেন তাপস। তিনি ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন আহমেদকে একাধিক কাজ দেন। মন্নাফিকে দেওয়া হয় গুলিস্তান এলাকায় একটি বহুতল ভবনের দুটি বেসমেন্ট ও একটি আন্ডারগ্রাউন্ডের নির্মাণকাজ। এতে করপোরেশন ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখে। আওয়ামী লীগের সভাপতিম লীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে ৩০ কোটি টাকার একটি কাজ দেওয়া হয়। ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ধানমন্ডি লেক সংস্কারের কাজ দেওয়া হয় ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের কামরুল হাসান রিপনকে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আওতাধীন প্রতিটি থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কাজ দিয়েছেন তাপস। ছাত্রলীগ, যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাসহ সংগঠন দুটির থানা, এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদেরও কাজ দিয়েছেন। এসব কোনো কাজই ঠিকঠাকমতো হয়নি। দুর্নীতি হয়েছে লাগামীহন।
মেয়র থাকাকালে তাপস ভারী গাড়ির ১৪৩ জন চালক, ৬৬ জন উপসহকারী প্রকৌশলী, ৭৭ জন হিসাব সহকারী, ২৭ জন রেভিনিউ সুপারভাইজার, ৩১ জন পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক, ২০ জন স্প্রেম্যান সুপারভাইজারসহ বিভিন্ন বিভাগে ৮৭৯ জনবল নিয়োগ দেন। নিয়োগ পাওয়া বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী মেয়রের পছন্দের লোক, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী। নিয়োগে ১০ থেকে ১২ লাখ করে টাকা নেওয়া হয়েছে।
সহকারী সচিব পদে নিয়োগ পেয়েছেন ধানমন্ডি থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আসিফ। রাজস্ব বিভাগের উপ-কর কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পাওয়া নয়জনের সাতজনই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। উপ-কর কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পাওয়া মুন্সি গিয়াস উদ্দিন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি গোপালগঞ্জে। ডিএসসিসির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক আওয়ামী লীগ নেতার মেয়ে সাদিয়া সারওয়ার আলী, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রফিকুল ইসলামকেও একই পদে চাকরি দেওয়া হয়েছে। উপ-কর কর্মকর্তা পদে চাকরি পাওয়া সৈয়দ সাদমানের তাপস পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমের জামাতা তাসিম হাসান উপ-কর কর্মকর্তার চাকরি পেয়েছেন।
সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পাওয়া শিহাব উদ্দিন কলাবাগান থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি। রাজস্ব বিভাগে রাজনৈতিক বিবেচনায় গত চার বছরে ১০৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দলীয় বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্তরা মেয়র তাপসের লোক পরিচয় দিয়ে রাজস্ব বিভাগে প্রভাব খাটাতেন। পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শকের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা পাঁচজন। নিউমার্কেট থানা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা খলিলুর রহমান পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক পদে চাকরি পেয়েছেন। আরেক পরিদর্শক রাসেল হাওলাদারের বাবা এলিফ্যান্ট রোড ইউনিট আওয়ামী লীগের নেতা।
হাতিরঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাদিম শিকদার একজন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। ১৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ রহমানকে ব্যক্তিগত সহকারী পদে চাকরি দিয়েছেন তাপস। তিনি তাপসের সহকারী একান্ত সচিব নাছিরুল হাসানের খালাতো ভাই। রেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগ পাওয়া সাইফুল ইসলাম একসময় ধানমন্ডি থানা ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিলেন। একই পদে নিয়োগ পাওয়া শ্রাবণী আক্তার ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার স্ত্রী। নিয়োগ পাওয়া ৩৪ জন উপসহকারী প্রকৌশলীর বেশির ভাগই রাজনৈতিক তদবির ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। অফিস সহকারী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত ৬৫ জনের সবাই তাপসের অনুগত।
পার্কিং, মাঠ ও পার্ক, ফুডকোর্টসহ অনেক স্থাপনা ইজারা দেয় ডিএসসিসি। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সামনের খালি জায়গা ইজারা পান তাপসের পছন্দের কাউন্সিলর নারগিস মাহতাব। তিনি কাউকে দরপত্র কিনতে দেননি। মতিউর রহমান পার্ক ইজারা নেন ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোজাম্মেল হকের লোকজন। ধূপখোলা মাঠের উন্নয়নকাজ করেন ৫৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকাশ কুমার ভৌমিক। তাঁর রয়েছে মেসার্স প্রভাতি অ্যান্ড কোম্পানি এবং মেসার্স তালুকদার অ্যান্ড কোম্পানি নামে কনস্ট্রাকশন প্রতিষ্ঠান। পুরো সিটি করপোরেশনের ইজারা, টেন্ডার কার্যক্রম সব তাপসের পছন্দের লোকজনই পেতেন। এ ছাড়া করপোরেশনের মালিকানাধীন ৯৩টি মার্কেট রয়েছে। এর মধ্যে মেরাদিয়া বাজার, খিলগাঁও কাঁচাবাজার, সিদ্দিকবাজার, বঙ্গবাজার, নিউমার্কেটসহ কমপক্ষে ১০টি মার্কেট তাপসের আমলে নির্মাণাধীন। এরই মধ্যে এসব মার্কেটের দোকানের বরাদ্দপত্র শেষ হয়েছে। প্রতিটি মার্কেটের ৩০ শতাংশ দোকান মেয়র কোটায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর এসব বরাদ্দ তাঁর আত্মীয়, কাউন্সিলরসহ আওয়ামী লীগের নেতারা পেয়েছেন।
তাপসের মামা বলে পরিচিত মো. ফারুক ও মাসুদ সেরনিয়াবাত করপোরেশনে ছিলেন সর্বেসর্বা। তাঁদের ভয়ে নগর ভবনে কেউ কথা বলতেন না। দুজনই মেয়রের ডান হাত হিসেবে করপোরেশনের ইজারা, ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। গড়ে তুলেছিলেন মামা সিন্ডিকেট।
মামাদের কথা না শুনলে ডিএসসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি থেকে সাময়িক অব্যাহতি, হামলা-মামলা দিয়ে হয়রানি করা হতো। তাপসের ক্ষমতাবলে তাঁর মামারা শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ধানমন্ডি ও বনানীতে একাধিক ফ্ল্যাট, কেরানীগঞ্জ ও মোহাম্মদপুরে একাধিক প্লট কিনেছেন। গাজীপুরে গার্মেন্টস ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। তাঁদের দুজনের দখলে ১০ কোটি টাকা মূল্যের ২০টি দোকান আছে। আজিমপুর নতুন মার্কেটে আত্মীয়স্বজনের নামে ১০টি দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন। সিটি করপোরেশনের প্রতিটি মার্কেট থেকে মাসে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নিতেন মামারা। জাকের সুপার মার্কেটের সভাপতিকে মারধর করে মার্কেট দখল করান কাউন্সিলর আওয়ালকে দিয়ে। মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল নিলেও তা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন দুই মামা ও কাউন্সিলর আওয়াল। কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। তাপসের সঙ্গে মামারা সিটি করপোরেশনের টাকায় বিদেশ ভ্রমণ করেছেন।
ঠিকাদার, ইজারাদার ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে কমিশন বাণিজ্যের লিয়াজোঁ করতেন এপিএস নাসিরুল হাসান সজীব। প্রতি ওয়ার্ডের উন্নয়ন বাজেটের ১৫ শতাংশ কমিশন নিতেন। সিটি করপোরেশনের নামে তোলা চাঁদার বড় অংশ পেতেন সজীব। ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরে রেস্টুরেন্ট, ফ্ল্যাট ও জমি কিনেছেন। করপোরেশনের মার্কেটে দোকান নিয়ে আত্মীয়স্বজনের নামে দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে জমি, দোকান ও বাড়ি কিনেছেন। তাঁর দুটি গাড়ি আছে। দুবাইয়ে টাকা পাচারের অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাপসের আশীর্বাদপুষ্ট ছিলেন মোর্শেদ কামাল। তাপসের কাছের মানুষ পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি, তদবির করে রাতারাতি আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছেন। এভাবেই তাপস গড়েছিলেন দুর্নীতির সিন্ডিকেট।