ডেক্স: চলে গেলেন ব্রাজিলের ফুটবল কিংবদন্তি পেলে। ৮২ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে ওপারে পাড়ি দিলেন ফুটবলের রাজা। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার(২৯ ডিসেম্বর) সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন পেলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তাঁর মেয়ে কেলি নেসিমেন্তো।
আট বছর আগের একদিন কবিতায় জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন, ‘যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ, মরিবার হলো তার সাধ।’ চলে যাওয়ার সময় বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা কি ঈশ্বর পেলেকে দিয়েছিলেন? হয়তো। নইলে তাঁর মৃত্যুটা তো বিশ্বকাপের সময়ই অনেকে ঘোষণা করে দিয়েছিল। কিন্তু ফুটবলের রাজা হয়তো বিশ্বকাপের আনন্দটা ম্লান করতে চাননি বলেই রয়ে গেলেন।
মারণ রোগের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ করছিলেন পেলে। কেমোথেরাপি কাজ না করায় গত নভেম্বরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এই কিংবদন্তিকে। কিন্তু অবস্থা খারাপের দিকেই যেতে থাকে। তাই তখন থেকেই ব্রাজিলের আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮২ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেলেন তিনটি বিশ্বকাপজয়ী বিশ্বের একমাত্র ফুটবলার।
পেলের জন্ম ১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর। বাবার দেওয়া নাম এডসন আরান্তেস দি নাসিমেন্তো। কিন্তু তিনি 'পেলে' নামেই বিশ্ববিখ্যাত হয়েছেন। ‘ফিফা’ ম্যাগাজিনের পাঠক এবং জুরি বোর্ডের বিচারে তিনিই বিংশ শতাব্দীর ‘শ্রেষ্ঠ’ ফুটবলার। তবে ইন্টারনেটে সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদের ভোট গিয়েছিল দিয়েগো ম্যারাডোনার পক্ষে। ফিফা শেষ পর্যন্ত যুগ্মভাবে দুজনকেই শতাব্দীসেরা ঘোষণা করে। ২০২০ সালে ৬০ বছর বয়সে হঠাৎ করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ম্যারাডোনা। আজ বিদায় নিলেন পেলে।
অসুস্থ ছিলেন অনেক দিন ধরেই। বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা তো ছিলই, কয়েক বছর ধরে এর সঙ্গে যোগ হয়েছিল কোলন ক্যানসার। এই মরণব্যাধির সঙ্গে লড়েও কেউ কেউ জিতে যান। পেলেও লড়েছেন কয়েক বছর। কিন্তু বয়সটা যে তাঁর পক্ষে ছিল না।
পেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গত ১ ডিসেম্বর। বছর দুয়েক ধরেই তো এমন নিত্য হাসপাতালে যাওয়া-আসা তাঁর। ভক্তরা চিন্তিত হন, আবার সেই দুশ্চিন্তা পেলেই দূর করে দেন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে টুইট করে বা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে। এভাবেই চলছিল। এবারও ভক্ত-সমর্থকদের আশ্বস্ত করেছিলেন, প্রথমে তাঁর কন্যা, পরে তিনি নিজেই। কেলি নাসিমেন্তো বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে জানিয়েছিলেন, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে পেলেকে, অন্য কিছু ভাবার দরকার নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত পেলের শারীরিক অবস্থার হালনাগাদ তথ্য দিয়ে গেছেন কেলি নাসিমেন্তো।