আর্কাইভ  বুধবার ● ১৫ অক্টোবর ২০২৫ ● ৩০ আশ্বিন ১৪৩২
আর্কাইভ   বুধবার ● ১৫ অক্টোবর ২০২৫
‘মা তুমি ইড্ডা কী করলা, আমার জীবনডা শেষ করলা’

‘মা তুমি ইড্ডা কী করলা, আমার জীবনডা শেষ করলা’

মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি আহত, মিয়ানমার নাগরিকের মৃত্যু

মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি আহত, মিয়ানমার নাগরিকের মৃত্যু

গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যার সব দায় শেখ হাসিনার

ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর
গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যার সব দায় শেখ হাসিনার

মিরপুরে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় তারেক রহমানের শোক

মিরপুরে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় তারেক রহমানের শোক

খনির ভান্ডার উত্তরবঙ্গ

শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১, বিকাল ০৭:২২

Advertisement

বাংলাদেশের বর্তমান অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে গ্যাস এবং কয়লার অবদান কম নয়। এবার লোহা বা লৌহ খনির সন্ধান পাওয়া গেল দিনাজপুরে। বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার আলীহাট ইউনিয়নে প্রাপ্ত লোহার খনির আয়তন ও মজুদ নির্ণয়ে এখন চলছে দ্বিতীয় পর্যায়ের ড্রিলিংয়ের কাজ। সংশ্লিষ্টদের মতে, এখানে ৭৩ শতাংশ আকরিক লোহাসহ মূল্যবান খনিজ পদার্থের সন্ধান পাওয়া গেছে। বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়াকে বলা হয় খনির জেলা তথা ভান্ডার।

দিনাজপুরে ইতোমধ্যেই ৪টি খনির সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে ৩টি উন্নতমানের বিটুমিনাস কয়লা খনি ও একটি গ্রানাইট পাথরের খনি। পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এবং মধ্যপাড়া কঠিন শিলা তথা পাথর খনি থেকে উত্তোলন চলছে এবং তা জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সমর্থ হচ্ছে। তবে ফুলবাড়ী কয়লা খনির উত্তোলন কাজ পরিবেশ বিপর্যয়ের আপত্তিসহ স্থানীয় জটিলতার কারণে স্থগিত রয়েছে। নবাবগঞ্জ উপজেলার দিঘীপাড়ায় কয়লা খনির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজও চলমান। এও সত্য যে, দেশে প্রাপ্ত কয়লা ও পাথরের যথাযথ আহরণসহ এর সম্পূর্ণ উৎপাদন এবং ব্যবহার হচ্ছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে জনমনে। যে কারণে বিদেশ থেকে কয়লা ও পাথর আমদানি করতে হচ্ছে। এতে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হয়। লৌহ খনির ক্ষেত্রেও অনুরূপ যেন না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকারকে।

পরিবেশবান্ধব কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্র এবং তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ আহরণ নিয়ে বিতর্ক আছে বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। স্থানীয় পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই এ নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ-আন্দোলন-মানববন্ধনসহ লংমার্চ করে থাকেন। বিশেষ করে সুন্দরবন রক্ষার জন্য রামপাল, পায়রা, মাতারবাড়ি, বাঁশখালী ও অন্যত্র নির্মাণাধীন ও নির্মিতব্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র নিয়ে তাদের নানা ওজর আপত্তি। পরিবেশ রক্ষার নামে বড়পুকুরিয়া ও ফুলবাড়ির ভূগর্ভস্থ কয়লা উত্তোলন নিয়েও রয়েছে তীব্র আপত্তি। তারা এমনকি পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে আপত্তি উত্থাপন করেছেন তথাকথিত নিরাপত্তার অজুহাতে। তবে বাস্তবতা হলো, বিশ্বব্যাপী প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় নিরাপদ জ্বালানি, জৈব জ্বালানি, সৌর বিদ্যুত, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা ও সচেতনতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেলেও এখন বিদ্যুত উৎপাদনের অন্যতম প্রধান উৎস কয়লা, তেল ও গ্যাস।

চীনে প্রায় ৬০ শতাংশ বিদ্যুত উৎপাদন হয় কয়লা থেকে। ভারতেও তাই। তবে বর্তমানে আরও উন্নতমানের প্রযুক্তির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত কার্বন নিঃসরণ উপযোগী কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ করে তা ৪৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। চীন বাংলাদেশের পটুয়াখালীর পায়রায় ১৩২০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণে ব্যবহার করছে অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ অবশ্য প্রস্তাবিত ৮টি কয়লা বিদ্যুত প্রকল্প বাতিল করে দিয়েছে। রামপালেও ব্যবহৃত হবে এই প্রযুক্তি। সেক্ষেত্রে পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞদের আতঙ্কিত বা উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ আছে বলে মনে হয় না। ভূগর্ভ থেকে অকরিক লোহা আহরণসহ পরিশোধনের ক্ষেত্রেও অনুরূপ আধুনিক প্রযুক্তি অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়, যাতে প্রকৃতি ও পরিবেশের কোন ক্ষতি না হয়। তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকন্ঠ

মন্তব্য করুন


Link copied