নিউজ ডেস্ক: শীতকাল মানেই কুয়াশার চাদর, টাটকা পিঠাপুলির সুবাস আর আনন্দের এক বিশেষ আবহ। আর এই স্নিগ্ধ ঋতুর সঙ্গে বাঙালির জীবনে মিশে আছে আরও এক মিষ্টি সম্পর্ক—বিয়ের সম্পর্ক। যারা নতুন জীবন শুরু করার পরিকল্পনা করেন, তাদের বেশিরভাগই বেছে নেন শীতের কোনো এক সুন্দর দিন। উৎসব আর আমেজের কারণে বছরের অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় শীত এলেই যেন বিয়ের ধুম পড়ে যায়। কিন্তু কেন শীতকালেই এত মানুষ গাঁটছড়া বাঁধেন? আবহাওয়ার আরাম ছাপিয়ে এর পেছনে রয়েছে আরও অনেক দারুণ সুবিধাজনক দিক। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক এমনই কিছু কারণ।
শীতকালীন সবজি খাওয়ার ৭ উপকারিতা
১. ছুটি আর আত্মীয়-সমাবেশের উৎসব
শীতকালের সঙ্গে বাঙালির উৎসবের এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। ধান কাটা হয় এই সময়ে, যা টাটকা চাল ও পিঠাপুলির উৎসব নিয়ে আসে। এর চাইতেও বড় সুবিধা হলো—শীতকালকে বলা হয় বিয়ের মৌসুম কারণ এই সময় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রায় সমস্ত প্রতিষ্ঠানে একটি বার্ষিক ছুটি চলে। এর ফলে আত্মীয়স্বজন যে যেখানেই থাকুক না কেন, সবাই অনায়াসে মিলিত হতে পারেন। বিয়ের মতো একটি বড় পারিবারিক আয়োজনের জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায় এই সময়ে।
২. মেকআপ থেকে মেন্যু: স্বস্তিতে সবকিছু
বিয়ের আয়োজনকে সহজ ও স্বস্তিদায়ক করে তোলে শীতের আবহাওয়া। মেকআপ থেকে শুরু করে খাওয়াদাওয়া—সবকিছুই করা যায় শান্তিতে।
কনের সাজের স্বাধীনতা: প্রতিটি মেয়েই চান বউ সাজার দিনে তাকে সবচেয়ে সুন্দর দেখাক। গরমে দামি মেকআপও ঘেমে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। কিন্তু শীতকালে সেই ভয় নেই। কনেরা নির্দ্বিধায় নিজেদের ইচ্ছেমতো ভারী মেকআপ এবং জমকালো পোশাক পরার স্বাধীনতা পান।
খাওয়াদাওয়ার নিরাপত্তা: বিয়ে মানেই বিশেষ খানাপিনা এবং ভূরিভোজ। গরমকালে খাওয়াদাওয়া কিঞ্চিৎ ঝুঁকিপূর্ণ থাকে; একটু এদিক-সেদিক হলেই পেটে গোলমাল দেখা দেয়। শীতকালে সেই ঝুঁকি কমে যায়, আর তাই বিয়েতে আয়োজিত নানা পদ স্বাচ্ছন্দ্যে উপভোগ করা যায়।৩. পরিশ্রম ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়
বিয়ে মানেই প্রচুর খাটাখাটুনি। গরমে একটু পরিশ্রমেই সবাই হাঁপিয়ে ওঠেন। শীতে সেই ভয় থাকে না। বরং বিয়ের উৎসবে গান ছেড়ে দিয়ে ছোটাছুটি করে কাজ করলে শীত উল্টো কম লাগে এবং শরীর সতেজ থাকে। এছাড়া ফ্যান বা এসির ঝামেলা না থাকায় বিদ্যুৎ খরচও কম হয়। অনুষ্ঠানের পর বেঁচে যাওয়া খাবারও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।
৪. ফুলের প্রাচুর্য ও সহজলভ্যতা
শীতকাল হলো ফুলের মৌসুম, আর ফুল বিয়ের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এই সময়ে গাঁদা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা—এই জাতীয় ফুলগুলো সহজেই পাওয়া যায় এবং দামও কম থাকে। কনের সাজে, মণ্ডপ সজ্জায় এই ফুলগুলো এক বিশেষ সৌন্দর্য যোগ করে। গোলাপ, বেলি, গ্ল্যাডিওলাস, অর্কিড, অ্যাস্টার, সূর্যমুখী, ক্যালেন্ডুলার মতো বহু ফুল শীতকালেই সবচেয়ে বেশি সহজলভ্য হয়।
৫. হানিমুনের সেরা সময়
বিয়ের পরই আসে হানিমুনের পর্ব। আর পাহাড়, সমুদ্র বা সমতল—যেখানেই ঘোরার পরিকল্পনা থাকুক না কেন, হানিমুনের ঘোরাঘুরির জন্য শীতকালই সেরা সময়। আরামদায়ক আবহাওয়ায় নতুন দম্পতিরা স্বাচ্ছন্দ্যে নতুন জীবনের শুরুটা উপভোগ করতে পারেন।