আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ২২ অক্টোবর ২০২৪ ● ৭ কার্তিক ১৪৩১
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ২২ অক্টোবর ২০২৪
 
 width=
 
 
 width=
 
শিরোনাম: উত্তরবঙ্গে ঘনিয়ে আসছে শীত; তাপমাত্রা ১৭.৮       আড়াই শতাধিক এসআইকে অব্যাহতি       প্রবাসী সরকার: কী বলছে আ.লীগ ও ভারত       রংপুরে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল        ব্যারিস্টার সুমন আটক      

 width=
 

চিলাহাটি হলদিবাড়ি রেলরুট পরিদর্শনে ভুটানের প্রতিনিধি দল

বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২, বিকাল ০৬:৪২

স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণে এবং খরচ কমাতে চিলাহাটি থেকে মোংলা পর্যন্ত রেলপথ ব্যবহার করতে আগ্রহ দেখিয়েছে ভুটান। এই বাণিজ্যের কাজ খতিয়ে দেখতেই বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে চিলাহাটি ও হলদিবাড়ি সীমান্তের রেলরুট পরিদর্শন করেছেন ভুটানের বিদেশ মন্ত্রনালয়ের একটি প্রতিনিধি দল। মোট ১৮ জনের এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন ভুটানের বিদেশ ও অর্থ মন্ত্রনালয়ের প্রধান সেওয়াং লাদেন ও কর্মা সোশার। তাঁদের সঙ্গে ওই দেশের পরিবহন দপ্তরের প্রধান সোনম চোফেলও ছিলেন। এদিন চিলাহাটি রেলওয়ে ভিআইপি রেস্ট হাউজের সম্মেলন কক্ষে একটি বৈঠকও করেছেন তাঁরা। 
এসময় উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক(এডিবি) এর কনসালটেন্ট ফিরোজ আহমেদ, রংপুর বিভাগীয় কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এর যুগ্ম কমিশনার মানস কুমার বর্মন, বাংলাদেশ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বানিজ্যিক কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস, ডিআরএম সুফি নুর মোহাম্মদ, চিলাহাটি সীমান্ত রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল রহিম, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ডিএমই মিজানুর রহমান, ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রমিজ আলম প্রমুখ। 
জানা যায়, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি আন্তর্জাতিক রেলরুট এবং বুড়িমারী-চ্যাড়াবান্ধা স্থলবন্দরেও বাংলাদেশে পণ্য পাঠানোর জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে সুবিধা পোর্টাল চালু করা হয়েছে। এই সিস্টেম কার্যকর রয়েছে ভুটানের েেত্রও। সুবিধা পোর্টালের মাধ্যমে বাণিজ্য করতে গিয়ে কোনও রকম অসুবিধা হচ্ছে কি না বা হবে কি না এ বিষয়েও ভুটানের প্রতিনিধি দলের কর্তারা খোঁজখবর নিয়েছেন। ভুটানের প্রতিনিধি দলের মনোভাব, বুড়িমারী ও চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত দিয়েও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য চলছে। এই বাণিজ্যে এবার রেলরুট যোগ করতে চাইছেন চিলাহাটি ও হলদীবাড়ি দিয়ে। কারন ভুটান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) এর পাশাপাশি মোংলা সমুন্দ্র বন্দর ব্যবহার করতে চায়। চলতি বছরের ডিসেম্বরে মোংলার সাথে রেলপথ সংযুক্ত হচ্ছে। ফলে মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে সরাসরি পণ্যবাহী ট্রেনে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলরুট দিয়ে পণ্য নিতে চায় ভুটান। যেহেতু ভুটানে রেলপথ নেই। তাই তারা (ভুটান) ভারতের আলিপুরদুয়ার, ডামডিম ও হাসিমারা ব্যবহার করবেন। সেখান থেকে বাংলাদেশ হতে আমদানিকৃত ও ভুটান হতে বাংলাদেশে রপ্তানীকৃত পণ্য ট্রেনে পরিবহন করতে আগ্রহী। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা হতেও পণ্য পরিবহনে ভুটান এই রেলরুটকেও বেছে নিতে চান। 
প্রকাশ থাকে যে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলে আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ২০২১ সালের ২৪ মার্চ বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। সে সময় তিনি চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথটি পণ্য পরিবহনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া চলতি বছরে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশের  প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা চারদিনের ভারত সফর করেন। সফরে দ্বিপীয় স¤পর্ক জোরদার হয়। ট্রানজিট সুবিধার আওতায় বিনা মাশুলে ভারতের স্থলবন্দর, বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহন করতে পারবে বাংলাদেশ। তৃতীয় দেশ বলতে প্রধানত নেপাল এবং ভুটানকে বুঝায়। নেপাল ও ভুটান ভূবেষ্টিত (ল্যান্ড লক) দেশ হওয়ায় সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনের সুযোগ নেই। তাই মোংলা বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথে ভারতের ভূখন্ড ব্যবহার করে সরাসরি নেপাল ও ভুটানে  পণ্য আমদানি রপ্তানির সুযোগ পাবে সেটিও উল্লেখ করা হয়েছিল। 
চিলাহাটি রেলষ্টেশন পরিদর্শন ও বৈঠক শেষে ভুটান প্রতিনিধি দলের পক্ষে ভুটান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি”র সহ সভাপতি কামাল প্রধান সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বানিজ্য সম্পসারণ, দ্রুত ও কম সময়ের মধ্যে পণ্য আমদানী ও রপ্তানির ক্ষেত্রে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ, মোংলা সমুদ্রবন্দর এবং বুড়িমারী- চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দরকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। বিষয়টি সরেজমিনে দেখার জন্য আমরা ভুটানের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের চিলাহাটি, বুড়িমারী ও ভারতের হলদিবাড়ি, আলিপুরদুয়ার, হাসিমারা, ডামডিম স্টেশন পরিদর্শন করেছি। 
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক(এডিবি) এর কনসালটেন্ট ফিরোজ আহমেদ বলেন, ভুটানের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় উঠে এসেছে তারা পণ্য আমদানী রপ্তানীর ক্ষেত্রে রেলপরিবহনকে গুরুত্ব দিতে চায়। পাশাপাশি ভুটান বাংলাদেশের মোংলা সমদ্র বন্দরকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন।  
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান বানিজ্যিক কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, ভুটানের পক্ষে বাংলাদেশ হতে পণ্য পরিবহনে রেলপথ ব্যবহার করতে চেয়েছে। এটি আলোচনার প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে এ মূহুর্তে ভুটান রেলপথে পণ্য পরিবহন চাইলে ভারতীয়য় পণ্যবাহিনী ট্রেনে পন্য পরিবহন করতে হবে। বাংলাতেশ রেলওয়ে ২০২৪ সালে ২০০ ওয়াগন আমদানী করতে যাচ্ছে। তখন আমরা আমাদের ওয়াগানে পণ্য পরিবহন করতে সক্ষম হবো। 

মন্তব্য করুন


 

Link copied