আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ● ৬ আশ্বিন ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: তাহলে কি ভাঙছে বিএনপি?       চিলমারী-রৌমারী রুটে শুরু হলো ফেরি চলাচল       রংপুরে আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের ৪ সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার       পদ্মা সেতুর আয় হাজার কোটি টাকা ছাড়াল       রংপুরে ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে মামলা      

নীলফামারীতে পরীক্ষামূলক গ্রীষ্মকালীন হলুদ তরমুজ চাষে ব্যাপক সফলতা সম্ভাবনায় 

শনিবার, ২৭ মে ২০২৩, দুপুর ০১:৪২

স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ কৃষক সামসুল হক (৩৫)। এবার নিজের ২৬ শতক জমির ১৫ শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করছেন গ্রীষ্মকালীন তৃপ্তি জাতের হলুদ তরমুজ। জমিতে চারা রোপনের মাত্র ৮০ দিনে অসংখ্য ছোট-বড় তরমুজে ভরেছে তার ক্ষেত। জেলায় পরীক্ষামূলক চাষে এমন সফলতা সাড়া ফেলেকে এলাকায়। তেমনি  ব্যাপক লাভের আশা করছেন ওই কৃষক। 
নীলফামারী সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের উত্তর কানিয়ালখাতা গ্রামের কৃষক সামসুল হক নিজের কৃষিজমি ২৬ শতর হলেও বাৎসরিক চুক্তি নিয়ে চার বিঘা জমিতে শাক-সবজীসহ বিভিন্ন ফসল ফলান। এবার ১৫ জমিতে চাষ করেছেন গ্রীস্মকালীন তরমুজ। সরেজমিনে গিয়ে সরেজমিনে কৃষক সামসুল হকের জমিতে গিয়ে দেখা গেছে বাঁশের তৈরী মাচায় অসংখ্য ছোট বড় তরমুজ ঝুলতে। ওই জমিতে রোপন করা হয়েছিল তৃপ্তি ও ব্লাক বেবি জাতের তরমুজ। এসব জাতের তরমুজের বীজ সরবরাহ করেছে সদর উপজেলা কৃষি বিভাগ। এলাকায় গ্রীস্মকালে এ কৃষিটি নতুন হওয়ায় তাকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। 
কৃষক সামসুল হক জানান, ১৫ শতকে জমিতে লাগানো হয়েছে ১৫০টি গাছ। প্রতিটিতে গাছে পর্যাপ্ত পরিমান ফল এসেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ফল বাজারে বিক্রি করা সম্ভব হবে। তিনি জানান, ১৫ শতক জমিতে তরমুজ চাষে তার খরচ হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। প্রতিটি গাছ থেকে অন্তত ছয়টি করে ফল এসেছে। যা বিক্রি করা সম্ভব হবে। যার প্রতিটির ওজন কমপক্ষে তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি। সে হিসেবে ১৫ শতক জমি থেকে এক হাজার ৮০০ কেজির অধিক তরমুজ পাওয়া সম্ভাবনা করতে তিনি। এতে করে বর্তমান বাজার দরে ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা আসবে তার ঘরে। মাত্র ৮০ থেকে ৯০ দিনে অন্য কোন ফসল থেকে ওই পরিমান আয় করা সম্ভব নয়। 
সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সুত্র মতে, নীলফামারী জেলা শীত প্রধান হওয়ায় জেলার কোথাও স্বাভাবিক সময়ের তরমুজ চাষ করেন না কৃষক। কিন্তু গ্রীস্মকালীন তরমুজ চাষে এ অঞ্চলের আবহাওয়া এবং মাটি উপযোগী। কৃষি বিভাগের অনুপ্রেরনায় এবছর জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের কানিয়ালখাতা ও পৌরসভা এলাকার হাড়োয়া গ্রামে তিনজন কৃষক তাদের ৩৪ শতাংশ জমিতে গ্রীস্মকালীন তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন। ফলন ভালো হওয়ায় আগামীতে এর সম্প্রসারণ বাড়ানোর কথা ভাবছেন এলাকার কৃষকরা। 
কানিয়ালখাতা ব্লক সুপারভাইজার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম জাকারিয়া জানান, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার চেষ্টা ও অনুপ্রেরণায় এবার গ্রীষ্মকালিন দুটি জাত তৃপ্তি ও ব্লাক বেবি তরমুজ পরীক্ষামূলকভাবে আমার ব্লক সহ  তিনটি ব্লকে তিনজন কৃষক ৩৪ শতাংশ জমিতে আবাদ করা হয়েছে। এ দুটো জাতের ভেতরের অংশ স্বাভাবিক সময়ের তরমুজের চেয়ে অধিক লাল ও মিষ্টতার দিক থেকেও অতুলনীয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তরমুজ বাজারজাত করা যাবে। 
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ বলেন, গ্রীস্মকালীন তরমুজ উচ্চ মুল্যের ফসল। এ অঞ্চলে বেলে দো-আশ মাটিতে এ জাতের তরমুজ চাষের উপযোগী। আমরা প্রথমবারের মত এর চাষ করে সফল হয়েছি। এমন সফলতায় এলাকায় এ কৃষির সম্ভানার দ্বার উন্মোচন হলো। এ সময়ে ব্যাপক তরমুজ চাষে হলে এলাকার কৃষকের ভাগ্য খুলে যাবে। তিনি বলেন, তরমুজের মূল সমস্যা শীত। এ অঞ্চলে শীত বেশি হওয়ার কারণে স্বাভাবিক সময়ের তরমুজ এ অঞ্চলে হয় না। কিন্তু গ্রীস্মকালীন তরমুজ চাষে যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় গ্রীস্মকালীন তরমুজ চাষে লাভ বেশি। গাছ রোপনের ৮০ দিনের মধ্যে ফলন বাজারজাত করা যায়। এটি যেমন রসালো, তেমনি সুমিষ্ট। 

মন্তব্য করুন


 

Link copied